মৃত্যু ও যৌনতা | রাহুল

|
‘Demonstration’ by Tammam Azzam |
|
(১)
একটু ট্রিগারে হাত রাখ ঘিলু আর ঘাম ঠান্ডা হোক আমি বাথরুম ঘুরে আসি কাল রাতের নেশা আসলে নেশা বাড়লেই যেন রাত বাড়ে
এবার সত্যি ট্রিগারে হাত রাখ গুলি চললেই থেমে যাবে বন্দুক যদিও দিকভ্রান্ত খুনীর দল চারিদিকে চাঁদমারি পরিস্কার একটাও ফোস্কা পড়ে না মোমের নেশানেশা গলন আমি সত্যিই বাথরুম যাব শরীরের অভাবে অনেক গোপন কাজ সেখানেই হয়।।
না এবার ট্রিগারে চাপ দিয়েই দাও ডেথ সার্টিফিকেট আমার সই যদিও অবিকল আমিটাকে আমিও বুঝি না একটা নীলনীল ভাব মনে হচ্ছে স্পর্শহীন হাতের ছোঁয়ায় অচেনা উত্তাপ আইডেনটিফিকেশন মর্গ লাশ আর কতো কী কী আমায় জানাতে হবে ই-মেল করে।।
এবারে নিশ্চিত ফায়ারিং স্কোয়াড কি বললে গেরিলা ওয়ার জোন পাগলা ঘন্টীর আওয়াজ এবার শালা নেশার ঘোরে আমি ওটাকেই জাতীয় সঙ্গীত ঠাউরেছি।।
ভাবনার মৃত্যু নেই শুধু প্রয়োগেই ভূলচুক থাকে তা থাকুক মৃতের তো আর কোন স্বাদ নেই রক্তের আছে নানান স্বাদ নোনতা মিস্টি তেতো কষাটে ম্যারিনেট মাংসের মতো।।
নাঃহ আর নয় এবার সাপের ছোবলই ভাল হিমঘর বরফের ওবু হয়ে বসা এবার দেখতে পাচ্ছি তোমায়।। ওটাই আসল ঠিকানা।।
এনকাউন্টার।।

(২)
একটা কংক্রীট রাস্তা একটা শপিং মল একটা পাগল এই নিয়ে ওরা কবিতা লিখতে বলেছিল আমি কিছু সাদা কাগজ নিয়ে বসলাম আঁচড়ালাম কামড়ালাম আঁচর কেটে নখ বসিয়ে দিলাম পিঠে একটু রক্ত বেরলো আমি দেখলাম আমার চারপাশে একটা যুদ্ধখেত্র যুযুধান প্রতিপক্ষ একটার পর একটা বিশেষ কিছু না, আমি বন্দুকের ট্রিগার কোনোদিন টিপিনি মানুষ খুনও কোনোদিন করিনি সে যতই হোক প্রতিক্রিয়া বা প্রতিবিপ্লবী সাহুকার এদিকে রাত বাড়ছে সিলিং-এ ঝুলন্ত শরীর আমাকে আমন্ত্রণ জানাচ্ছে একটা প্রস্তাব ভিন্নমতে আমার হাত চলছে শরীরের সবচেয়ে গোপনতম নরম জায়গায় একটু বিশেষ কিছুর অভাব সিগারেটের বিরুদ্ধে সিগারেট দেশলাইয়ের বিরুদ্ধে দেশলাই আগুন শুধু আগুন আর কিছু ছাই আমার কৃত্তিম ছবি পুড়ে যায়
শ্যামলী রূপাঞ্জনা শতাব্দী সেঁজুতি জয়ী হ্যালো তোমরা কি শুনতে পাচ্ছ তোমাদের গোপনীয়তা আমাকে বিভ্রান্ত করছে ক্রমাগত আমি বুঝছি না মাটি আর আকাশের বিভেদ
কোথায় যেন পড়েছিলাম শব-সাধনাতেও যৌনতার প্রয়োগ প্রয়োজনীয়
আচ্ছা লাশেরাও কি মৈথুন করে ওরাও কি সঙ্গম করে নাকি চামড়ায় ঘষাঘষি হলেই বিস্ফোরণ অবশম্ভ্যাবী আমি প্রতিটা রাতকেই ভয় করি আবার প্রতিটা রাতকেই বাঁচিয়ে তুলি পরবর্তী রাতের অপেক্ষায়
এই তো আমি এঁকে ফেলেছি
কংক্রিট রাস্তার বদলে সূর্য আমি মলোটোভ ককটেল দিয়ে শপিং মলকে গুঁড়িয়ে দিয়েছি আর পাগলটাকে খুন করে ফেলেছি এবার ওকে বানিয়ে দেব আসন্ন লোকসভা নির্বাচনের স্থায়ী এজেন্ট এবার নিশ্চিন্ত পরাজয় আসন্ন।।
একটা কুড্যেটা করবোই করবো।।

(৩)
মাঝেমাঝে ব্যর্থ হতে বেশ লাগে
বেশ লাগে পরাজিত হতে
রাতের আড়াল আঁচলে নীলনীল জ্যোৎস্নার নেশা পালাতে চাইলেও পালাতে পারি না
নষ্ট আত্মা অভিশপ্ত অভিমান।।
তুমি যখন পাঁজরে বিঁধছো শান্তির আলপনা
আমি তখন কৃষ্ণচূড়ার দেশে যুদ্ধ করছি হাতে ফাগুন নিয়ে আমার বাষ্প চোখ আগলাচ্ছে
তোমায় দূরের বিন্দুগুলো ক্রমশ সরে আসছে কাছে আমি এঁকে দিচ্ছি সেইসব দাগ তোমার
অলিতে-গলিতে রাস্তায় জলে
প্রতীকী পরাজয়।।
শরীর বিকোনোর হিসাব কষছো তুমি
কেন আমারই কাছে
স্ত্রী প্রেমিকা বন্ধু মা বা সন্তান
এর যে কোন একটা হতে পার তুমি যখন তখন
শরীরের প্রতারণা বিষয়ী আঘাত
মৃত্যু হলেও চিন্তার প্রতিসরণ অবাধ
শুধু শরীরটা অবশ 
তাই মৃত্যুর চোখে আমি তৃতীয় পুরুষ
তুমি তৃতীয় নারী
একটা গোপন অভিনয়।।

(৪)
তোর নাভিপদ্মের দেখান পথ ধরে আমি পৌঁছে যাই যুযুধান সমুদ্র সৈকতে আমি বালিতে আঁচড় কাটি আঁকি সাপ আর সমান্তরাল ঢেউয়ে ভিজতে ভিজতে আমি কামড়ে ধরি অস্থির চোরাই কাঠ কতোটা উঁচু নিচু উপত্যকা-হিমালয়-কৃত্রিম উপগ্রহ আমাকে অপ্রকৃতিস্থ করে তোলে যেভাবে বালিশের অভাবে কবিতা ভুলে যাই মনে হয় এই তো বেশ মুখোমুখি আলাপ-অভিমান-পরিচয়।।
তাই শব্দগুলো জলের সিন্দুকে লুকিয়ে রাখি তোর স্তন বিভাজিকা আমাকে দেয় বিদ্রোহের ইঙ্গিত রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসকে খিস্তী মারি রংরুটে লং মার্চ করি একটা আদমশুমারি থেকে কুড়িয়ে পাওয়া কালচারাল রেভেলিউশন।।
তোর যোনীর আড়ালে থাকা আদিম ঈশ্বরের
যখন আমি একমাত্র উপাসনা করি।।
জানি একদিন মৃত্যুও তুলে নেবে ঋণাত্মক শোধ
পুনর্বাসিত যৌনতায় প্রাক্তন হওয়া যতো বোধ
ইসব প্রকাশ্য চেতনায় জখম্ আজাদি তত্ত্বকথা
হয়তো সত্যিই এবার নেশার ঘোরে নগ্ন কবিতা
যদিও কাল রাতে আমি দেখে ফেলেছি তোর আসল রুপ লুনাটিক লাশ- আসন্ন প্রয়োগ মতে।।
বাতাসেরও কি ভাইটাল স্ট্যাটিস্টিকস্ আছে?|

Comments