নতুন দিতি | বারীন ঘোষাল
ঘরে দুটো আলো আছে মুখোমুখি দেয়ালে। একটা বড় টিউব আর
একটা এল-ই-ডি। জামা কাপড় ছাড়ার আর পরার সময় আয়নার দরকার হয় না স্বপনের। শুধু চুল। ঘরে
প্রমাণ সাইজের আয়নার মুখোমুখি টেবিলে বসে লেখার সময় কদাচিৎ মুখ তোলে স্বপন। মনে করে লিখতে বসে তার সততার সুতো যদি
খুলে যায় তা নিশ্চয়ই মুখের ছেঁড়া-ফেরানোয় দেখতে পাবে। কম্পুটারে চোখ। --- খুলে
ফেলতে ফেলতে ব্রা, শর্টস্, প্যান্টি, চুলের ব্যান্ড, ক্লিপ, একের পর এক ছড়িয়ে
দিচ্ছিল বারীন রঙ মেক ব্র্যান্ড ডিজাইন লক্ষ্য না করেই। প্রতিটি স্টেপ-এ সোনালীর
ভাবান্তর মিস করছিল সে, আর সোনালীও কোন প্রতিক্রিয়া জানাচ্ছিল না। এ কি স্ট্রিপ
টিজ হচ্ছে না কি ম্যানিকুইন-এর পোষাক খোলা হচ্ছে? সোনালী কি রক্তমাংসের মানুষ না?
তার স্নায়ু দরকার, আয়ু দরকার, ইচ্ছা, মুড, যৌনতা, শিহরণ... অভিনয় করার জন্য তো
এসবও চাই। এখন কম্পুটারে বসে আঙুল কোথায় কোথায় চালাবে স্বপন যাতে সোনালী জাগে,
সত্যিকারের নিউড-এর রোল করতে পারে। স্বপন নিউডিটি-কে বাংলায় লিখল ‘নতুন দিতি’। বোঝা যাবে তো? সোনালী তো
বুঝল না। বারীন কি বুঝল?
সিগারেট
ধরিয়ে বাগানে নেমে এল বারীন। ধীরে ধীরে পায়চারি। টবগুলোয় খানিকটা করে জল দিলো
বাগানের কল থেকে। ফুলে গন্ধ। ফুলে রঙ। হাওয়ায় ঈষৎ দুলুনি। টবে ব’লে তার মাথা সমান
উঁচু। সবুজ সুন্দর। বারীনও একটু দুলে দুলে গাছে গা ঘষলো। কী আরাম। বারীন যত না
শরীর দিয়ে স্পর্শ করে, গাছও ততোধিক। সিগারেটটা ফুরিয়ে গেলে সে দু-হাত বোলায় হেনা
গাছটার গায়ে। হেনা শিউরে ওঠে, সরে যায়, ফিরে এসে ঝুঁকে পড়ে বারীনের গায়ে। খেলাটা
বোঝে সে। হেনার শিহরণ, আরাম, ইচ্ছা, চাহিদা তার নতুন দিতি-কে জাগিয়ে তুলছে, কাছে
এসে জড়িয়ে ধরতে চাইছে। হেনার স্তন নিতম্ব যোনিরোম অধর নাভি চুল হাতের বেষ্টনী সব
টের পাচ্ছে বারীন, হেনার আদর, তার আরাম তার খুশি, আঃ -- অথচ হেনাকে নির্মোক করার
প্রয়োজন নেই। তার কোন স্কার্ট প্যান্টি ব্রেসিয়ার ব্রা নেই। কিছুই খুলতে হয়নি। হেনার
নতুন দিতি ভিজিয়ে দিলো বারীনকে। পুরুষের গায়ের গন্ধ হেনাকে জাগিয়ে তোলে। সোনালীকে
জাগায় না। টাকা? হয়তো। কম বেশিতে নিউডিটি কমে বাড়ে -- না? যদি হাসতো -- না? নতুন
দিতি সোনালীকে মানায় না।
কম্পুটার
থেকে চোখ তোলে স্বপন। মুখোমুখি কেউ নেই আয়নায়। যাঃ শালা! কোথায় এলাম বে? হাওয়া? হাওয়াও
তো দেখা যায় না। নিজেকে চিমটি কেটে দেখল। -- তাহলে আমাকে কেউ দেখতে পাচ্ছে না?
পাশের খাটে ব্রা প্যান্টি খোলা সোনালী শুয়ে আছে। তার চোখ নেই। নিশ্বাস চলছে। অবাক
কান্ড! সোনালীর সাড় নেই, গন্ধ নেই, নিউডিটি নেই। অবাক কান্ড। অসাড় দেহটার দিকে
তাকিয়ে খানিকটা পায়চারি করে আড় ভাঙ্গালো স্বপন। এটা কি করে সম্ভব! একটা জলজ্যান্ত
মেয়েছেলে, সুন্দরী, অবাক শরীর, কি ভাল গায়, নিউড হয়েও তার নিউডিটি নেই কেন ভেবে
পায় না সে।
বারীন ঘরে
এল। মুখে হাসি। শোয়া সোনালীকে দেখে মুখ বেঁকালো প্রথমে। তারপর নির্বিকার ভাবে
আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে জামা কাপড় খুলতে লাগল। চটি চশমা শার্ট প্যান্ট গেঞ্জি
আন্ডারওয়্যার, একে একে খুলতে খুলতে সোনালীর ছাড়া জামাকাপড়ের ওপর গাদা করে রাখল। উলঙ্গ
সোনালীকে দেখেও কোন বিকার হল না তার। আয়নার সামনে ঘুরেফিরে নিজেকে দেখল অনেকক্ষণ,
গায়ে হাত বোলালো, নিউডিটি তারও নেই যে! অবাক কান্ড! একটু আগেই বাগানে হেনার
স্পর্শে কি রকম...
স্বপন
তাড়াতাড়ি টাইপ করতে লাগলো --- জামাকাপড় খুলে নিউড হওয়া যায় কিন্তু তাতেই নিউডিটি
জাগে না। তাকে নতুন দিতি দিতে হয় না। নতুন দিতি বস্ত্রের ওপর নির্ভর করে না।
বস্ত্র অর নো বস্ত্র, যার নতুন দিতি আছে তার আছে, যার নেই তার নেই। ‘নতুন দিতি’
স্বপন তার আবিষ্কার ভেবে পুলকিত হল। হেনার সংস্পর্শে বারীনেরও কি নতুন দিতি
জেগেছিল তার কাছে জানতে হবে। ব্যাটা জামাকাপড় পরে ভদ্র হোক আগে। তারপর সোনালীকে
তার খুলে ফেলা বস্ত্রগুলো পরিয়ে দিক। দুজনে স্বাভাবিক হোক। চা খাক। সিগারেট।
সোনালীও লম্বা লাইট গোল্ডফ্লেক খায়।
|
নতুন দিতি, এটা সত্যিই তোমার আলাদা ও একমাত্র তোমার নিউডিটি ...
ReplyDeleteখুব ভালো লেগেছে
খুব ভাল লাগলো দাদা।
ReplyDeleteখুব ভাল লাগলো দাদা।
ReplyDelete