মেহেদি হাসান তন্ময়





দুঃখিত এক পাথর

তোমাকে বলতে গেলে, কে যেন শিশুসুলভ সেলাই করে দেয় ঠোঁট। কাঁকভেজা চোখে চেয়ে থাকে ভোর, যেন শব্দের গভীরে পৃথিবী দিয়েছে কপালে হাত। মোড়ে যখন ছড়ায় উত্তাপ, তখনি বোধ হয়, সুবাতাস - যেন চলে গিয়েছে কবে!

চোখ মিলিয়ে দেখি, নিজের ভেতরে ভাঙ্গাগড়া। এমন পিচ্ছিল কালভার্টে আহত হয়ে পড়ে, দেখি- বোকাচাঁদ; অচেতনে কবে করেছে অস্পষ্ট গ্রাস! টের পাইনি শুধু হাত রেখে বুকে, এত গভীরে যেন হয়েছে প্রয়াণ; চলে গ্যাছে শূন্যের ভেতর স্তব্ধ ঘূর্ণি মেখে - কতটা অসীমে!

এমন সময়ে মেঘ মানে ভবিষ্যৎ প্রাক্তন, এমন নয় আমি - আকাশে হতে চেয়েছিলাম। যেখানে কেউ নেই বলে আমি নিঃসঙ্গ ঘাসের মতো, হটাৎ মাড়িয়ে গেলে প্রার্থনার মতো নুয়ে পড়ি। চেয়ে থাকি অসীমে! তবুও বৃষ্টি এলে, ভাঙ্গা বাহু তুলে ঘুম থেকে জেগে উঠি মৃদ্যুল সিম্ফোনির মতো -

হে বৃষ্টিচ্ছল হাওয়া, বামনের মতো হাঁটতে হাঁটতে আমি কুঁজো হয়ে গেছি। লজ্জাবতীর মতো তুমি লুকিয়ে থেকো না আর - শব্দের পোষাক খুলে ঘুমাও গোপন বাক্সে, যেন হাওয়ায় দুলে ওঠে পৃথিবীর মতন এক দুঃখিত পাথর।



ভালোবাসাহীন

চিৎকারের উচ্চতায় চাপা আমাদের শহর; প্রভাতের নীল আকাশ আমাদের অন্তর্গত। উপুড় করা রুটির মতন, ফুলে আছে। ক্রমশ ছড়িয়ে উত্তাপ অন্ধকার দানব এসে খেয়ে ফেলবে তাকে। যখন আমরা সীমান্ত পার হতে হতে মরুদ্যানে চলে যাই, তখন হুড়মুড় করে রাত ঢুকে আসে আমাদের অস্পষ্ট জীবনে। দেখি - অন্ধ উচ্চতার ভেতরে ডুবে গ্যাছে পৃথিবী। হাওয়া নেই কোনো; কেবল থই থই আস্বচ্ছ এক নীল বয়ামের ভেতরে বুঁদ হয়ে আছে প্রাণসকল।

কবিতাই প্রথম বিজোড় পতিতা, আজীবন ভালোবাসা চেয়েও - খুঁজে পেলো না হাত!



নিঃসঙ্গতা

মাছের চোখে গাছ
ও তার ওপারে ঝিকিমিকি আকাশ -
সবই নিঃসঙ্গ কেবল
প্রকৃতি টেনে এনেছে
,
যেন দেখা যায় জলের ভেতরে
কেমন একটি নিঃসঙ্গ মাছ।


Comments