খন্দকার নাহিদ হোসেন




 
কল্যাণীয়াসু-কে

লিখলাম খনিজে কল্যাণীয়াসু। এক দৈর্ঘ্য মন্ত্র লোভ। কষ ফুটলে কিভাবে বেড়ে ওঠে ঘর - সেইসব। পাতার পিঁপড়া ভুল, দু’হাতের আধো আধো কালি তখন ছায়ায়...ভীষণ একলা করে দিলো। তবু লিখলাম-আড়ি মাখা শীতের উত্তরে চোখেদের নাড়ি, কাজল পর্বত।

যাবে বলে গোছাচ্ছ সকল। ঘূর্ণনের পালে বাঁকা বাঁকা চন্দ্র চূর্ণ। ত্রিপিটক দেরি হয়ে যাওয়া। কয়েক নথের দিন-দরজার আবডাল। সব কাঠ মাপলে অন্যফুলের কাঠ?

পৃথিবীর পর্বতে সারাজন্মেই ধার। এতবার লিখি চোখ...তবু খালি কেটে কেটে যায়। মহাদেশে-মহাদেশে...গোলোকের শীতে... ঝিরঝির আবডাল?

ঐ উত্তরে চোখেদের নাড়ি, কাজল পর্বত



কিতাব  

বৈশাখের ওয়াক্তের মতো দিন
ঝড়ে...
ঝরে ঝরে শুধু ছুঁই
কালো যাদুর পাতাতে লেখা
জীবন কৌটায় থাকে এক
-সোনামুখী সুঁই!
হঠাৎ থমকে যাই, আয়োজনে খুঁজি
পুরাতন কিতাব কি জানে
-
মানুষ কোথায় থাকে
- এ বুকের কোনখানে?

সোয়াদের বাটি ডোবে রেহেলের পাতে। রহমতের সূরায়-হরফে হরফে পবিত্র শব্দের সুর। বোধ গাঢ় হয়। আমরাও গাঢ় হতে হতে তসবি দানার মতো জমে হই ভোর। তবু এক জুম্মাবারে-জামে মসজিদ বর্ডার দেখিয়ে দিলো! আর তুমিও শৈশব ঈদকার্ডে ভরে... কাছে এসে বললে - প্রেম কী?

এখনো ঝলসে যাই - কেঁপে কেঁপে উঠি
মনে ঘাই দিলে কেউ ভীষণ রকম
অথচ পরাস্ত রাত
- কাঁচুমাচু সাল
রাজা-রাণী পুড়ে ছাই
আপন মন্ত্রী-কোটাল!

জিগিরের মতো এক আফসোস। বিশ্বস্ত খাদেমের মতো শুধু তাল দেয়-জীবনকে বলে সিন্নি চাই। চায় সে ভীষণ কফের রাতে সোহাগের তালমিছরি! ভাবি জিন সাধনায় যাবো-কিংবা ইসতেখারা কি জানাবে সেই উড়া উড়া নাম? তিনতলা, নামবিহীন এক মানবীকে মনে রাখবার কৈশোর যদি বুঝতে-যদি! অতঃপর কিতাবেই থাকুক নারীর জন্য লেখা গনগনে উক্তিঃ 

‘যদি ভুলে যাও - যদি যাও
তবে যেন ভেবে নেবো
বৃথা এ পুরুষজন্ম!’  



ক্ল্যাপস

স্নানজুড়ে রমণের ভিড়ে...মফস্বলে সন্ধ্যা নামে
কলতলা খালি হয়, সাবানের চ্যুত ঘ্রাণ কিছুটা হাওয়াতে থাকে
সন্ধ্যা নামে... সন্ধ্যা;

ধরে রাখতে সীমানা লাগে দীর্ঘ গাছ বলেছিল
অথচ যৌবনে কে শোনে সে সব কথা?
বেশুমার ঝড় বড় হয়... ব্যান্ডপার্টি বাজে
জানালার রমা দিদি - বিয়ে ছেনে বিষ খায়
তবু দেখো - বিধানে সঙ্গমই সব...

এক একদিন এমন স্বয়ম্ভূ চিন্তা থিরেথিরে ভাবি  
তোমার কথাই ভাবি, মণ্ডপের দেবী - ঘুরে ঘুরে আসে
ঢোলগুলো রোজ রোজই সন্ত হয়... মফস্বলের মাইক বাজে
আর কোল জুড়ে একা হয় - বিসর্জন রীতি;

ডুবিয়ে দিয়েই সেই যে কলতলাতে গেলে
চ্যুত ঘ্রাণ ছেনে নিলে - সখীদের রতি ঝাড়, আহা...
অনন্তে নামে না সন্ধ্যা?

প্রিয় নন্দী বাড়ি, বিষণ্ণের কলতলা... আসুন, ক্ল্যাপস হোক
ক্ল্যাপস।

Comments