শাফিনূর শাফিন
নার্সিসাস
১.
আমরা মূলত গ্লাভসের ভিতরে খুলে রাখা হাতের উষ্ণতার মতো আচ্ছন্ন থাকতে ভালবাসি! নেশা ধরলেই যেমন আমি আয়নার সামনে বিস্মৃত বসে থাকি।
২.
মাঝেমাঝে নিজেকে স্পর্শ মাত্র এক অন্ধ পরিব্রাজক তিমি জেগে ওঠে, এক মাতাল ঘূর্ণিঝড় - আমি ডুবতে থাকি। নিজের শরীরের চেয়ে বেশি প্রিয় কি কিছু হতে পারে!
৩.
৪.আমি একজনকে ভালোবাসি, সে ভালবাসে বহুজনকে। আমি আবার এদিক সেদিক ঘুরে এসে তাদেরকেও ভালোবাসি। ভালবাসতে বাসতে অস্ফুটে উচ্চারণ করি, “ডাইনী!”। মানুষ তাঁর জেদের কাছে ভীষণ অসহায়! অসুখ-২ আমি টের পেতে থাকি কীভাবে কীভাবে যেন আমার শরীরে গজিয়ে উঠছে একটা শহর, পকেটে মার্বেল গুঁজে পৌরাণিক পথঘাট, থমকে-দাঁড়ানো ঝাউপাতা , কার যেন চিৎকার! একটা মরচে-ধরা গেট ঠেলে, দূরে-ছুঁড়ে-ফেলা শৈশব থেকে ভেসে আসে বাচ্চাদের সুর-করে-খেলতে-থাকা, "মেলা গো মেলা, আমরা সবাই খেলা, একটি মেয়ে বসে আছে, তার কোনো বন্ধু নাই, ওঠো গো ওঠো, চোখের পানি মোছো!"... ঘুমের মতো স্নান মানুষের সবচেয়ে একান্ত। আচমকা বাথরুমের দরজা খুলে অর্ধোউন্মাদিনীর একবিষদৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকা! সুর মিলিয়ে যায়! শৈশব মিলিয়ে যায়! একদিন এক পাগল জ্যান্ত মুরগি হাতে নিয়ে দৌড়ে রাস্তার মোড়ের হোটেলের সামনে জ্বলন্ত কড়াইতে ছেড়ে দিল। আমি টের পাই উন্মাদ হবার পরও মানুষের সাবকনশাস জানে, মাংস রান্না করেই খেতে হয়! টের পেতে থাকি একজোড়া খুনে-লাল চোখ ছুটে আসছে- চোখ বন্ধ করে ফেলি! ঘুমের ভেতর শুনি অবাধ্যতা- সবকিছু ভেঙে পড়ার শব্দ... ঘুমিয়ে পড়লে আমি হারিয়ে যাই। ঘুমিয়ে পড়লে বেজে উঠে অ্যাসাইলামের পাগলা সাইরেন। জুহু বীচের ব্যালকনিতে ক্রমাগত ঝুঁকে পড়ছে সমস্ত অসুখ মিলিয়ে যাচ্ছে খিলখিল হাসি, উন্মাদনা ক্রমাগত... ডানা নেই, ছায়া নেই
সমুদ্রের গল্প আমি কখনো করি না। সমুদ্রের কাছে গেলেই আমি অসুস্থবোধ
করি। ঢেউগুলো কেমন বিশ্রী মুখ হাঁ করে সিংহের মতো গর্জন করতে থাকে। সবাই তাতে কেমন
হ্যাংলার মতো পা ডুবিয়ে থাকে আর কোন এক শিশু সেই ঢেউয়ে লাফাতে লাফাতে বলে “দ্যাখো দ্যাখো! আমার পা
সমুদ্রে হারিয়ে গেল!”
আমার শরীরে কোন শিশুপ্রীতি নেই, পশুপ্রীতি নেই, তাই কোন সমুদ্রপ্রীতিও
নেই।
অথচ এবার ঘর পালানোর জন্য তুই সেই সমুদ্রকেই বেছে নিলি! সেই মুখ হাঁ
করা গর্জন হয়ে উঠবে তোর দুপুর!
তোকে ধার দেয়ার পর আমার আর ডানা নেই, ডানার ছায়া নেই।
|
|| সূচীপত্র
|
|
বাকিগুলো ত পড়েছিই, ২ নম্বরটা সম্ভবত কখনো পড়িনি। এবং এত ভালো লাগল! প্রথম স্তবকগুলো বেশি। শৈশব শৈশব
ReplyDelete