দলছুট – কেমন লাগার কথাবার্তা - রাজেশ চট্টোপাধ্যায়




রিভিউ
|  
যশোধারা রায়চৌধুরীর ‘দিনগত’ একটি রোম্যান্টিক উপস্থাপনা ভাল লাগার আবেশ আনল প্রথমেই। ‘তোমাকে পালিয়ে’ নেওয়া ও ‘বাঁচো হয়ে’ থাকার ভাবনা ছুঁয়ে থাকার মত। বারীন ঘোষাল তাঁর ‘শ্লেটের মেমরি’ যথেচ্ছ মুছে দিচ্ছেন চিরাচরিত ধারা, হ্যাঁ অস্বীকার করার উপায় নেই তাঁর লেখা মূল স্রোত থেকে নিঃসন্দেহে বিচ্ছিন্ন এবং স্বকীয়। ‘নিশ্ছিদ্র বিয়োগে প্রবলেম বলে কিছু নেই সবই সমাধান’ – এ উচ্চারন এক মলয় রায়চৌধুরীই করতে পারেন, তাঁর লেখার আপিল আম্র বড় প্রিয়। দেবারতি মিত্রের নীলাভতা আকর্ষণ করার মত, সুন্দর প্রগতি নিয়ে এগিয়েছে লেখাটি। ঈশিতা ভাদুরির উপস্থাপনা আরও ভাল হতে পারত। উমাপদ কর এর লেখা পড়ে শেষে আহ না বলে পারলাম না, মনটা হাল্কা করে দিল। সুবীর বোস এর লেখাটি শেষ বেলায় দারুন মোড় নিল, ভাল লাগল তাঁর শৈলী। আষিক এর নামকরন তাঁর লেখার স্পিরিট ধরিয়ে দিচ্ছে, এলোমেলো হয়েও যেন মেলাতে পারলাম। নস্টালজিক বোধে সজ্জিত ইন্দ্রানী মুখোপাধ্যায় এর লেখা আদৌ ‘ভুল ঠিকানায়’ পৌঁছায়নি। ঈশিতার কবিতা শুকনো ন্যারেটিভ মনে হল। স্রোতস্বিনী চট্টোপাধ্যায় ‘উঠোন জুড়ে ঝমঝম বৃষ্টিতে আগুন’ ধরিয়ে দিল। দারুন উচ্চারন অনির্বাণ ভট্টাচার্যয়ের – ‘আমি এক ঘর অমাবস্যা খেয়ে/ কেমন সিল্যুয়েট হয়ে শুয়ে আছি’। আধুনিক উপস্থাপনাটিতে ‘আমায়’ শব্দটি এসে হোঁচট খাওয়ালো ইন্দ্রনীল ঘোষের লেখায়। অন্য ধরনের দেখা নিয়ে লেখা জয়দীপ মৈত্রের ‘আঁক’, খুব ছুঁয়ে গেছে। ‘দেখা না হলে যেটুকু মন খারাপ হয়, সেটুকু নিয়ে লিখতে গিয়ে/ দেখি বারবার দেখা হয়ে যাচ্ছে আমাদের’- উফ উফ উফ... অসাধারন, হ্যাটস অফ দীপ্তিপ্রকাশ দে। ‘পেতেই শিখেছ শুধু, অনেকটা পেতে হবে বলে;
প্রাপ্তি কে চিনতে শেখোনি’... দারুন লাগল জয়দীপ চট্টোপাধ্যায়ের উচ্চারন। অর্জুন বন্দ্যোপাধ্যায় এর ৩ টি লেখাই ওহ ওহ ওহ, জাস্ট ফেটে পড়ছে (আমাদের চলতি ভাষায়) - ‘যেনস্যুইচঅফআরস্যুইচঅনেরমাঝখানেযতটুকুগ্যাপ/তারমধ্যেএকটাইউনিকর্ণনিয়েবসেআছি’ ও ‘আজকালস্পর্শনামকঅত্যন্তস্নেহসুলভকথাটিও/আমিঝুঁকেপড়েতোমারসাদাকাঁধেরওপররাখি’... অসাধারন লাগল আমার। ‘গাছেরযতটাদৃশ্য, ততটাইগৃহস্থেরভাষা’... দারুন শৌভ চট্টোপাধ্যায় এর ভাবনা। অন্যরকম স্বাদ পেলাম উল্কার ভাষায়। আসমা অধরা আশাবাদী, বেশ লাগল। অতি সাধারন উচ্চারন দূর্বা সরকারের। দারুন ভাবে শেষ হয়েছে রাজর্ষি মজুমদারের ‘বসন্তমঙ্গলের দিনে’। কম্প্যাক্টনেস এর অভাব মনে হল প্রজ্ঞাদীপাহালদার এর লেখায়। সমরজিত সিংহ এর লেখায় একটা সেক্সচুয়াল ইমেজ পেলাম নতুন আঙ্গিকে। প্রবীর রায় অভিনব লিখেছে। সরোজ দরবারের লেখা বেশ ভালই লাগল, ভাল উপস্থাপন। তানভীর হোসেন এর দারুন দেখা আছে তাঁর লেখার মধ্যে। খুব সুন্দর প্রকাশ ভঙ্গি তাঁর। ‘‘আমি’টা আদতে আমিহীন অনুভূতি’ সুস্মিতা ভট্টাচার্যের লেখায় অন্যোন্য ভাব আছে। সেখ সাদ্দাম হোসেন এর উচ্চারন ‘কারো বুক ছুঁয়ে দ্যাখ/ ঈশ্বর তোমার ভাষাতেই কথা বলে’ দারুন লেগেছে। সিয়ামুল হায়াত সৈকত বেশ রোম্যান্টিক লিখেছে। আহা – কচি রেজা, আর কিছু বলার নেই। কৌশিক চক্রবর্তী নতুন কিছু আনতে চাইছে কবিতায়, এখন অনেকেই চেষ্টা করছে, কিন্তু কতটা গ্রহনযোগ্য সেটা পাঠক বলবে। নতুনত্ব ভাল লাগল কিন্তু লেখার স্পিরিট মন ছুঁল না। বেশ নতুন লাগল সৌমাভ এর লেখা। সুভান এর খুব বাস্তবতা ভাল লাগল, কাব্যিক সুখ পেলাম না যদিও। নুরুল হাসানের ‘অবিক্রিত’ বেশ লাগল। হঠাত হঠাত ঝলক দিয়ে গেল কিছু ছবি... অনুপম মুখোপাধ্যায়ের লেখায়। ‘নৌকোগুলো কাগজের না হলে,বহুদূর যেত’... নন্দিনী ভাল লিখেছেন। শুভ্রদীপ রায় এর লেখা বেশ লাগল। ‘অপেক্ষার অন্তে -/একফালি চাঁদ জেগে থাকে !’ দারুন মিলন চট্টোপাধ্যায়। বেশ ভালই লাগল অরিন্দমের লেখা। চয়ন ভৌমিক নিজস্বতা দেখিয়ে বেশ লিখেছেন। বেশ অভিনব লাগল জ্যোতির্ময় বিশ্বাস এর লেখা। সুন্দর ‘প্রাপ্তবয়স্কের আলপনা’ এঁকেছেন অভ্রদীপ গোস্বামী। রুক্সিনীকুমার নিজেকে খুঁজে বেড়ানো আসলে অনেককে নিজের মধ্যে দিয়ে দেখানো। স্বাতী বিশ্বাস ‘আবার অংক’ দেখালেন নতুন ক্যানভাসে। নিখিল নওসাদ যথেষ্ট সৎ সাহস রেখে সুন্দর উপস্থাপনা করেছেন। ‘সব অসুখের ডাকনাম হয় না/যেমন ভালোনাম থাকে না/
সমস্ত সুখের’... এটাই কবিতা, কোয়েল। খুব সত্য কথা সৌম্যজিতের ‘আকিঞ্চিত’।





আরও অনেক লেখা ছিল যেগুলো আমাকে সেভাবে ছুঁতে পারেনি তাই সেগুলো নিয়ে সেভাবে লিখলাম না। ভাল লাগার মধ্যে –রঞ্জন মৈত্র, রঙ্গীত মিত্র, সুপ্রিয় মিত্র, প্রশান্ত সরকার, সুমন গুন, রানা পাল, রাহুল রায়চৌধুরী, আকাশ দত্ত উল্লেখযোগ্য। ভাললাগা না-লাগা বড় আপেক্ষিক, আমার ভাবনা যাপন আমার মত তাই আম্র ভাবনায় যেটা ভাল অন্যের ভাবনায় সেটা না ও হতে পারে। তাই এটা আমার সমালোচনা নয়, বরং ভাললাগার কথাবার্তা। ধন্যযোগ।
| |

Comments