মোহ ১১ - কবিতা পর্ব - ২
মোহ(কবিতা)
|স্পেস
-দেবোত্তম গায়েম
( ১ )
কিছু নিরবিচ্ছিন্ন আদিখ্যেতা
মুঠো খুললেই গাছে গিয়ে বসে
ওটা পাখি নয় মোটেও
তাহলে ওর স্বর বলে কিছু থাকতো না
অথবা কোনো সাধুভান
(২)
ষাট মিনিটে একটা পথিক একটা জীবন পার করে দিল
তার আলখাল্লা পোষাক টুকু গণতন্ত্রের ভাষ্যকার
আমরা একনিমেষে বলে ফেলতে পারিনা
স্পেস দাও ,স্পেস দাও| |মেয়েবেলা - অনির্বাণ ভট্টাচার্য
একটা বেলুন বেশ বয়ে যায়
নর্দমায় ......
এক একটা ঘরের নেমপ্লেট হঠাৎই পাল্টে দেয়
জন্মদিন ।
বাবার আগে বসে যায় মা’র নাম – তারও আগে
হয়তো বা মেয়েটার নাম – যেন বা আলনা,
তোরঙ্গ বা রোদে মেলা ছাদ – অফিস-ফেরত হরমোন
পেরিয়ে ছোটোখাটো মাতৃতান্ত্রিক পৃথিবী ।
বেলুনটা মাঝে মাঝে আটকায়
নর্দমায় – জমা জলে
বেড়ে ওঠে কথা ছোঁড়াছুঁড়ি - দেয়াল আর
রান্নাবাটির বাতিল পলিথিন -
যেভাবে শ্বাস ক্রমে দীর্ঘ হয় – সে আর বাবা মা’র হবেনা
এ কথা জানার পর ।
বেলুনটা হঠাৎই কোঁচকায়
নর্দমায় – পাশ দিয়ে হাঁটা
বাচ্চাটা চমকে ওঠে – মেঘ বৃষ্টির অজুহাত
যেমন বোশেখের আকাশে ।
কেন থাকা গেল না - কেন কেউ এল না
আরও একঘর জন্মদিন নিয়ে – ভাবতে ভাবতে
হঠাৎ শব্দ - চানে ধোয়া গলি,
রঙ চটা শাড়ির ফাঁক দিয়ে
চকিত বিস্ফোরণে কেঁপে উঠল কলকাতার বাড়িগুলো ।
জানল না
একটা বেলুন একদিন কিভাবে পড়ে যায় -
নর্দমায় ।
|
|আবার একটা শীতকাল পার হয়ে যাচ্ছে - রাজদীপ পুরী
আজকাল পাতা ঝরার শব্দ কানে লাগছে খুব!|
যতবার ভাঙা যায়, দ্যাখো, ঠিক ততবারই ভেঙেছি নিজেকে
তবু এখনো আঁশ লেগে রয়েছে আঁশবটির গায়...
এই দ্যাখো, আবার একটা প্রেম করতে ইচ্ছে করছে-
পুরানো বান্ধবীদের ডেকে এনে নতুন করে বলতে ইচ্ছে করছে,
আই লাভ ইউ...আই ...আই...আই...
আবার তালগোল পাকিয়ে যাচ্ছে সব, মুখ দিয়ে ফেনা উঠছে, গ্যাঁজলা
একটা সুর অকারণেই খেই হারাচ্ছে-
আবার একটা শীতকাল পার হয়ে যাচ্ছে, আবার
কিছু পাতা ঝরার শব্দ
|বিশ্বাস - জয়দীপ চট্টোপাধ্যায়
সেদিন বিশ্বাস চিনেছি
যেদিন কেউ চিনিয়েছিল
জন্মদিন
সে চেনাও পেয়ে গেছে লঘু ক্রিয়াপদ
প্রেমের মতন
শোনা যায়, দেওয়ালে দেওয়ালে
'বিশ্বাস কর?'
ঠিক একই ভাবে আরও কি যেন
করার কথা
জানতে চাইছে বার বার?
অথচ আমি
জন্ম দেখেছি - এক এক করে
বিশ্বাস জন্মায়... প্রেম;
তারপর চিনেছি নশ্বর।
মোরামের ওপরে স্রোত
তারও ওপরে উদগ্রীব এক পা
অপেক্ষার নীরবতা পাখি
হয়ত শিকার
হয়ত বা বিশ্বাসে চোখ বুঁজে আছে চরাচর।| |গেরোস্থালী - আকাশ গঙ্গোপাধ্যায়
পালিশ করা মাথার উপর কেউ চালালো কাঁচি
আজ এভাবেই বাঁচি
কালকে আবার গালির ভয়ে বাজাব হাততালি
ঘরের কোণা খালি
ভাড়াটে ভাই ঘুরতে গেছে আগের মাসের শেষে
হাত বোলাবে এসে
আমার টাকে; দু’একটা চুল উত্তেজিত হলে
আবার যাব গলে
তারপরে সব কৌটো ভরে আমায় আকার দেবে
হাত বাড়িয়ে নেবে
আমার থেকেই একফালি চাঁদ শুক্রবারের রাতে
সাজায় বিছানাতে
ফের শনিবার রান্না ঘরে চাঁদ বানাবে রুটি
একটি-তিনটি-দুটি
ভিজবে নাকের দু’পাশটা, নির্লজ্জ চোখের জলে
ময়দা মাখার ছলে
শেষ হপ্তার দাগ মেটেনি, নিভল দিনের আলো
মোমের বাতি জ্বালো
চাঁদ এসেছে! শুক্রবারের অপেক্ষা তার সাথে
অলস পূর্ণিমাতে|
Comments
Post a Comment