মোহ ১২ - পর্ব ২


- সম্পাদনাঃ অনুপম মুখোপাধ্যায়
|
রানা বসু-র দুটি কবিতা
দৃষ্টি 

মোড়ক থেকে বেরিয়ে আসার আগে
চিৎকারটা সামলানো যাচ্ছে না
বার বার জন্মানোর অভ্যেসটা
আমায় পা ফেলতে সংযমী করে
একটুও গা ঘেঁষে দাঁড়ালে
চিঠিগুলো অস্পষ্ট বুকে উঠে দাঁড়ায়

একটা গোটা মাঠের মাঝে একা হতে চাইছি
ঘাসগুলো আলাদা করে দাঁড়িয়ে থাকা
পিলারগুলো আমায় বিপদের মুখে ঠেলে দিচ্ছে
এখানে মাধ্যম বলতে পাশাপাশি লেগে থাকা
এখানে চলন গমন নেই
স্থির নির্বাক এককোষী
অ্যামিবা স্বপ্ন

একটাই রাস্তা
এদিক ওদিক
তবু দৃষ্টি দুদিকেই সমান দূরত্ব অতিক্রম করে


এক সোনালী প্রতিপক্ষ  

প্রতিপক্ষের উদ্যত ছোরায় প্রতিফলিত আলো
আমাকে বাধ্য করছে ওকে প্রতিপক্ষ ভাবতে
আমি যতটা না ছুরিতে শান দিচ্ছি
ততটাই ওকে প্রতিপক্ষ ভেবে হারিয়ে যাচ্ছি
হারিয়ে যাচ্ছি আবার ফিরে আসছি
ওর পাঠানো আলোর সংকেত
ছুরি তলোয়ারের ঝনঝন
আর বাঁশপাতার শব্দে।

আমরা তৈরি হতে বড্ড সময় নিই,
ওরা সময় নেয় প্রয়োজনমাফিক।
তাই আমরা প্রতিপক্ষ ভাবতে পারি
প্রতিপক্ষ হয়ে উঠতে পারি না
                    ওদের মত।।
|
|
আপেল - সনৎ মাইতি


নিউটনের আপেলের মত নেমে আসি

পেন ড্রাইভে আপেল নামাই.....

ঈশ্বর

তোমার বাগান পুড়ে ছাই......
|
|
শট এনজি - সরোজ দরবার

(১)
মূল্যবৃদ্ধি এসে যখন বলে, কাপড় হঠাও-
শান্ত ইস্কুলখোকার মতো আমরা খুলে ফেলি;
পাঁচবছর নিয়মিত সুখ করে নিয়ে তবেই সে
হাতজোড় করে দাঁড়ায় গিয়ে পরবর্তী অধিবেশনে।
ভোট রাজনীতির সরু রড যখন হুড়হুড়
করে ভিতরে ঢুকে যায়, আমাদের দাঁতে দাঁত;
আমার গোপন মৌলবাদ যখন তোমার
যোনি ফালাফালা করে ফেলে, তোমার বিদ্বেষ
যখন আমাকে পাথর ছুঁড়ে ছুঁড়ে ঠুকরে মারে-
আমাদের শান্ত কলম, পরিপাটি মোমবাতি তখন
মৌনীব্রতে, আমরা জানি, সাফাই ঘর থেকেই
শুরু হয়, ‘রাষ্ট্রীয় কাঠামো’ বলে ফেললে
অহং উনুনে তুষ পড়ে, পোড়া ঝুল পড়ে সেই পাঁজরাতেই;
এ সব কী আমরা জানি না, জানি, তথ্যচিত্র
যা জানে তারও বেশি জানিয়ে পূর্নতাবোধ 
যদি আমাদের বলে-
ওঁ ধর্ষমদঃ ধর্ষমিদং ধর্ষাৎ ধুর্ষমুদচ্যতে।
ধর্ষস্য ধর্ষমাদায় ধর্ষমেবাশিষ্যতে।।
ওঁ শান্তিঃ শান্তিঃ শান্তিঃ।।

তবে ত্রিবিধ বিঘ্নের শান্তি, সিস্টেমের কপালে অক্ষয়ফোঁটা;

এই তো জীবন কালীদা, 
শুধুশুধু ফিচার লিখে আর কী হবে!
|
|
মরচে - শঙ্খদীপ কর

ছেলেটা জানলা ফেরি করে
দূরপাল্লার জানলা।
একপাশে একপাশে আজন্ম লাটাই, বিপরীতে ঘুড়ি।

বিক্রি করে
একটা সম্ভব না, সম্ভাবনার মোড়কে।

ট্রেনের বাতাসে গুঁড়ো করে দেয়
“সুখি দাম্পত্যের চাবিকাঠি”।

দাম্পত্য - শঙ্খদীপ কর

শেষপর্যন্ত কাছে।
শেষপর্যন্ত দূর।
যেভাবে একটা আড়ষ্টতা
রাস্তা হওয়ার চেষ্টায়
আরও আড়ষ্ট।
  
যেভাবে একটা নিঝুম
চৈতন্য হতে চায়। ঠিক
সেভাবে নয় অথচ
না-বলাগুলো দ।
|
|
দেয়াল - শৌভ চট্টোপাধ্যায়

আজকাল দেয়ালে কান পাতলেই শুনতে পাই, বাইরে বৃষ্টি পড়ছে। পাশের বাড়িতে কেউ গান গাইছে। সারাদিন, জলের শব্দের নিচে ধুয়ে রাখছে স্টিলের বাসন। সপ্তাহে দু’দিন আমি খবরের কাগজ রাখি। সপ্তাহে দু’দিন, একটা কুকুর এসে ক্ষতস্থান চেটে দিয়ে যায়।

মাঝেমাঝে শুনতে পাই, কে যেন ওপাশ থেকে হেঁটে আসছে দেয়ালের দিকে। আমাকে শুনবে বলে চুপচাপ দাঁড়িয়ে রয়েছে। তখনই ঘরের মধ্যে কেঁপে ওঠে ঘর, সারারাত অন্ধকারে চুনবালি ঝরে।
|




মোহ(কবিতা)

Comments

  1. bhalo laglo besh. kobi ki bangla te haiku/tanka ghoranar kobita likhe thaken?

    ReplyDelete
  2. আপেল - সনৎ মাইতি


    নিউটনের আপেলের মত নেমে আসি

    পেন ড্রাইভে আপেল নামাই.....

    ঈশ্বর

    তোমার বাগান পুড়ে ছাই......

    এই কবিতার কবিকেই কি জিজ্ঞেস করছেন ? কবিতায় আকৃতিগত হাইকুর ছাপ।

    ReplyDelete
  3. আকৃতিগত দিক থেকে হয়ত আছে। তবে আমি হাইকু লিখিনি

    ReplyDelete
  4. apel namle bagan purbe kyano?
    etai jigNasa.

    ReplyDelete
  5. শুধু বাগান নয... ঈশ্বরের বাগান...

    ReplyDelete

Post a Comment