২১ শে - কবিতা সংখ্যা - পর্ব ৭
মোহ (কবিতা)
|ব্যক্তিগত - সুমন গুণ
এই সময়ের কথা কদাচিৎ আমায় লেখায়
ছায়া ফেলে, পেছনের ঘরে
যেখানে টেবিলভর্তি বই, আর দেয়ালের গায়
বিকেলের আলো এসে পড়ে
আমি সেই আলো আর আলোর অধিক
অন্ধকারে সময় কাটাই
কারো কারো কাছে এই স্বরলিপি অস্বাভাবিক
চেয়েচিন্তে তবুও যা পাই
আমার তো তাতে বেশ স্বচ্ছন্দেই চলে
সন্ধ্যা নামে কোয়েনার জলে|
|প্রবীর রায়ের কবিতা
পাঁক
পাঁক
শুয়োরগুলি নর্দমা ঘেঁটে সাধারন দিনটার গায়ে মাখিয়ে দিল অসাধারন বিষয় থেকে বন্ধুকে বাদ দেওয়া যাচ্ছেনা কিছুতেই কেননা পথচলতি মানুষেরা জানে মিছিলের মোমবাতি একটা সময় নিভে যায় আর এই দুর্গন্ধ আমাদের জীবনী লিখছে
সীমাপরিসীমা
একটা যাইছবির ওপরে একটা নাইছবি টাঙানিয়া ভুলে কি যাবে সেই ঝুঁকে পড়া গন্ধরাজ লোভ যতই শান্ত হয় সাহিত্যের তুলনামূলক ততই আড়ালে যাওয়ার হুড়োডাক আসে|
|ভাসা - রাণা পাল
পালের মত মেঘের ভাসা
নীল আকাশের সমুদ্দুরে,
সোনালী গাং চিলের ভাসা
রৌদ্র মাখা হাওয়ায় ঘুরে,
সবুজ মনের কল্পে ভাসা
নরম আলোর গভীর ঘুমে
ভোরের শিশিরে রঙিন ভাসা
ফাগুন বেলার এ মরশুমে,
শালুক দোয়েল স্বপ্নে ভাসে
বাংলাদেশের আলোর আশায়,
আমার ভেসে থাকা কেবল
বাংলা ভাষায়, বাংলা ভাষায়।|
|সরোজ দরবার
একান্তে যা প্রকৃত তৃতীয় বিশ্ব।|
(১)
নিজস্বি
আলো ভাঙা সকাল, মন ভাঙা বিকেল
তোমাদের লিখতে পারিনি বলে
আমি শুধু ভাত ভাঙার কথা লিখি...
কথা ভেঙে গেলে জন্মায় কথা না রাখা,
তাদের ঘৃণিত, জারজ জীবন মাড়িয়ে
কুয়াশাভেজা বাতাসকে লিখতে পারিনি বলে
গরম ভাতের ভাপে আমি মুখ ভিজিয়ে নিই
ভাতের বাইরে বেরনো হল না, তাই
কত নিজস্বি মার খেল, মৃদু চাপড়
পড়ল না পিঠে, বঁড়শি গাঁথা মৎস্যপুরাণ
ঝপ করে খুঁজে নিল ছলচাতুরি ইশারাদের
গরমের দেশে, হা অন্ন, আমি আটকাই পড়লাম,
ভেতো-মেঠো যাই ভাবা হোক, তাইই ঠিক
তবু ভাতেরই ক্রীতদাস আমি, রইলাম ভাতের প্রেমিক।
(২)
বয়ঃপ্রাপ্ত কবিতা
তুমি না ছুঁলে বয়সপ্রাপ্তি হবে না কক্ষণও,
জানলে, সেইসব মহিলার ডাক, শুনেও শুনতাম না...
ডাক তো সন্ধিকালীন বয়সের ধর্মে শোনা,
তবু উপায় সহজ ছিল না, ফিলহাল দিনে
সার্চ বোতাম ছোঁয়ামাত্র ফ্যান্টাসি কুমারীরা
যেমন আসে, সহজলভ্য ছিল না সুখপ্রদায়িনীরা
সেদিন, হলদে মলাটের ভিতর রঙিন অ্যাসেটের
বন্দিনী বা কমিক স্ট্রিপের বউদি সার্বজনীন,
কিংবা অসম্ভব ফিট সেইসব ডিজিট্যাল মহিলারা-
লোভ দেখিয়েও বয়স প্রাপ্ত করতে পারেনি যারা;
অথচ কী সাংঘাতিক বড় হওয়ার নেশা,
একবিকেল লুকোচুরির বন্ধুনিরা একদিন আচনক
বড় হয়ে গেলে, কাকীমারা ওদের সব বুঝিয়ে দিত,
ওরা দূর, ক্রমাগত দূরত্বের গন্ধ ওড়নায় মুছলে,
আমরা ভেবেছি, কমিকের ভাবীই বুঝিয়েছেন সবই তা!
কিছুই না, শুধু ওইসব অতিবাস্তব আর নিখুঁত
মহিলাদের ত্বকে শুধু পিছলে যেত কৌতুক,
ওদের নাভি আর না-গোপন অঙ্গের রিংয়ে
এ-ফোঁড় ও-ফোঁড় হয়েছে নকশিকাঁথার রাত
তবু বয়স প্রাপ্তি হয়নি, যুবকের অছিলায়
দীর্ঘ কবিতাকে নাবালক করে রেখেছিল মাত্র..
আজ মাত্র, এই বুঝেছি, তুমি ছুঁলে বলে,
কেন এতদিন চোখের থেকে, মুখের থেকে
নীচে আরও অতলে চোখ নেমে গেলে
প্রতি সদ্য যুবার সত্যি বউদিরা সকৌতুকে,
বুঝি বা কিছুটা স্নেহের বশেও হেসে ফেলে।
(৩)
ঠগিণী
অফিসফেরতা মৃদু আলো জ্বলে ওঠা
ঝুলবারান্দা-আসলে প্রবঞ্চক
যুবককে দেখায় নকশা কাটা অন্তর্বাস
যুবককে করেছে রঙিন কল্পনায় নিঃস্ব;
বাতাস শুধু প্রগাঢ় লগ্নতায় টের পেত,
দিনভর রগড়ানির গন্ধটুকু
|তানভীর হোসেন
চক্র
মৃত লোকটার পাশের শয্যায়
এলো এক সদ্যজাত শিশু
তাদের দেখা হল না, হলে
হাসপাতালে জন্মাতো
ফিনিক্স পাখি।
আদর্শ
আদর্শ কে আমি এক গোপন বাক্সে
লুকিয়ে রেখেছি ডাকটিকিটের মতো
একটা বেড়াল কাঁটার দিকে লাফ দিচ্ছে
না পেয়ে ছায়া ভেবে আবার দিচ্ছেও না
আমি ভাবছি টিকিটগুলো থেকে
কিছু ওকে দিয়ে দিই
ও কাঁটা ভেবে বাড়ী নিয়ে যাক
একটু খেয়ে বাকিটা জমিয়ে রাখুক
লুকিয়ে রাখুক!
পাঠ
বয়স আমায় শেখায় হে তীক্ষ্ণ বায়স
তোমার কর্কশে লুকোন মিঠাস
মৃতদেহ সারি সারি ভঙ্গীমা একই
তবু প্রবোধই ঘুরেফিরে আসে
এই বুঝি শেষ দেখা!
হেসেলে যতোটা লাকড়ি পুড়ে যায়
ততোটাই ধুপকাঠি জ্বালিয়ে দেখেছি
মা,চালকেই মুক্তো মনে করে!|
Comments
Post a Comment