২১ শে - কবিতা সংখ্যা - পর্ব ১৩
মোহ(কবিতা) ||
|মূক চাঁদ - নির্মাল্য বিশ্বাস
নিশুতি রাতে খুন হয় বোবা চাঁদ ,
খসে পড়া আলোর পালকে
রক্তাক্ত অশ্রু নদী চর ।
পৌরুষের পতাকা হাতে
স্বদম্ভে হেঁটে বেড়ায় রাহু ,
খোলা আকাশের বুকে
আঁকা হয় সভ্যতার নগ্ন স্বাক্ষর।
বিবেকের মোমবাতি ফানুস হয়ে নিভে যায় মানুষের হাতে
ঝাউ এর সীমানা ধরে চাঁদ ডুবে যায় মৃত্যুর সাগরে
আলো নেই , কোনও আলো নেই ...
তবু চাঁদ খুঁজে বেড়ায়
জটায়ু রুপী সূর্যের ঘর ।|
|সংলাপ, অসংলগ্ন - জ্যোতির্ময় বিশ্বাস
.........
-এই রাস্তা দিয়ে হেঁটে পালিয়ে গেছে
গোল্লাছুট বয়সের যুবতী আর প্রায়বসন্তের যুবক
গোল্লাছুট বয়সের যুবতী আর প্রায়বসন্তের যুবক
-প্রায় শব্দটা বড় কাছাকাছি নিয়ে যায়..
এমন শব্দকে দূরে রাখা ভালো।
এমন শব্দকে দূরে রাখা ভালো।
- কত দূরে? আসমুদ্র হাইফেন দিয়ে জুড়ি?
-যদি সত্যি তা পারতাম, জ্যোতির্ময়!|
|প্রাপ্তবয়স্কের আলপনা - অভ্রদীপ গোস্বামী
পোড়া মাংসের গন্ধ শোঁকা নাক এখনও
কি সুন্দর ঘ্রাণ নেয় দুধে-আলতায়
আঁকা বঙ্কিম আলপনায়...বান্ধবীর পরি হয়ে ভেসে বেড়ানোয় ...|
ঘুম ভাঙলে ভুলে যাই রাতস্বপ্নের পরি
বালিশে হাতড়াই দোলচক্রের ফুল
আঁকা হয় তালুতে বিধবার শিকার চিত্রণ
তোমার চিবুকে হাত রাখে হৃদয় সংবেদী মন...
বালিশে হাতড়াই দোলচক্রের ফুল
আঁকা হয় তালুতে বিধবার শিকার চিত্রণ
তোমার চিবুকে হাত রাখে হৃদয় সংবেদী মন...
প্রেমিকাকে যতদিন ভালোবাসা যায় বন্ধু ভেবে
ততদিনই অতি সহজ ইতিহাস জ্যামিতিক চিত্রের মতো বুকে ও তলপেটে ধাক্কা খায়
বান্ধবী প্রেমিকা হলে নিজগুনে সম্পাদ্য আঁকায়...
বহুদিন আগে শিকার ছেড়েছি তবুততদিনই অতি সহজ ইতিহাস জ্যামিতিক চিত্রের মতো বুকে ও তলপেটে ধাক্কা খায়
বান্ধবী প্রেমিকা হলে নিজগুনে সম্পাদ্য আঁকায়...
পোড়া মাংসের গন্ধ শোঁকা নাক এখনও
কি সুন্দর ঘ্রাণ নেয় দুধে-আলতায়
আঁকা বঙ্কিম আলপনায়...বান্ধবীর পরি হয়ে ভেসে বেড়ানোয় ...|
|প্রকাশনী - রুক্সিনীকুমার
হ্যাঁ দাদা ।
ছাপবেন, আমার লেখা, হুবহু লিখি আমি মানুষের
ভাবনা,
আপনি দেখুন, আমার হাতের লেখা,
কুচো মুক্ত ছড়িয়ে দিয়েছি পাতায় পাতায়
।
হ্যাঁ দাদা, পড়েছিতো, সবার লেখা পড়েছি, নাম করি বিনয়-শক্তি-জয়-শঙ্খ-সুনীল-শ্রীজাত সব হুবহু পড়েছি ।
বাসে-ট্রামে-ট্রেনে-রিক্সায়-অটোতে পড়েছি
।
কবি হতে আমি সব করেছি ।
হ্যাঁ দাদা, আমি পোস্টমডান, সারিয়াল, বিট, হাংরি সব পড়েছি । আমার ইতিহাস ভালো জানা, পরখ করে দেখে নিতে পারেন । বিদেশী কবি বেশ পড়া আমার, নাম করি নেরুদা-র্যাবো-গিন্সবার্গ-কিটস-এলিয়ট ।
তাহলে দাদা, পাকা কথা দিলেন কি ছাপবেন ?
খামের ভেতর ভরেদি আর এক জবাবী খাম,
অপেক্ষার খাম, আশার খাম, ধৈর্যের খাম ।
হ্যালো, শুনতে পেলেন কি ? কি বলছেন ?
হ্যালো, আদেও ছাপছেন কি ? আমি কবি হতে চাই ।
কি অ্যাপ্লিকেশন পাঠাতে হবে ?
হ্যালো, কি কোয়ালিফিকেশন চাই ?
লিটিল ম্যাগ না বইমেলা কবে ?
আমার লেখা, হ্যালো ? আমার কবিতা, হ্যালো ?
আমার শিল্প, হ্যালো ? আমার এতদিনের অধ্যয়ন, হ্যালো ? এতলেখা, পাতার পর পাতা,
এত কালি খসিয়েছি, হ্যালো ?
ফেসবুক, টুইটার, গুগালপ্লাসে ভর্তি ভর্তি
লেখা,
হ্যালো ?
আমি কবি, মানুষ ?
আমি মানুষ, কবি ?
আমি কি ?|
|মাছরাঙা দ্বীপ - শুভদীপ মৈত্র
আছে নাকি তোমার কোনো মাছরাঙা দ্বীপ
আছে নাকি মাছরাঙা দ্বীপ?
গাঢ় রঙের পালিশ-মারা ঠোঁটে
যতই চেপে ধর আমাদের আঁশ – ভিজে, নোনা,
যতই ভেবেছ কষ্টে মালকোষ গমক থাকে
আলাপের পর বিলম্বিত হতে হতে
আলাপের পর বিলম্বিত হতে হতে
ভাসিয়ে দিয়েছে কারা ডিঙি।
দেখ টাল খায়, পায়ের দাপনা মারে,
পেখমের মতো ঝিকিয়ে ওঠে জাল
খিদে সম্বল করে এরকম টিঁকে থাকা যায়,
হুট করে মরে যাওয়া যায়,
এর মাঝে হুঁহুঁ মাছরাঙা দ্বীপ
ধ্যুস মাছরাঙা দ্বীপ।
আসলে তুমিও ওই ডিঙির মতোই
আসলে তুমিও খোঁজো শুধু নদীর ফসল।
গাঢ় ঠোঁটের আর পাখনা যাবতীয় রঙ
দেখেছে তারা, যারা একান্ত নৈর্ব্যক্তিক।
তাদের নিয়ে কবিতা হয় লেখা
তাদের বগল ঘামে না কখনই,
আদর করার সময় ক্লান্তিতে
ঘুমিয়ে পড়ে না।
তারা জানে হাতে হাত জড়িয়ে
হাঁটতে, বল্ অথবা সাঁওতালি নাচ বেশ পারে।
এদের নিয়ে তুমি যাবে না কখনো
মাছরাঙা দ্বীপে।
এদের চোখের পলক শুধু তুলিতে আটকে রেখে
আমাদের সঙ্গে কাটিয়ে দেবে কয়েকটা বছর।
এ জীবনে যতগুলো পাওয়া যাবে দিন
বেসাতির খোঁজে যাব শুধু মাছরাঙা দ্বীপে,
বেসাতির খোঁজে যাব মাছরাঙা দ্বীপে।|
Comments
Post a Comment