মোহ ৯
মোহ(কবিতা) |
রুমান শরীফ
[] রুপকথারা
১.
আয়নার বিপরীতে দাঁড়িয়ে কী দারুন ক্রোধে ফেটে পড়ছো নিজের সাথে এতো অভিমানে কি আছে ।
নেমে এসো রাস্তায়
ঘুপচিতে জীবন বিষিয়ে যাচ্ছে
মনে মনে বার যে বলো
ইঁদুরের মতো কেবল গর্তে ঢোকা ।
আয়নার বিপরীতে দাঁড়িয়ে কী দারুন ক্রোধে ফেটে পড়ছো নিজের সাথে এতো অভিমানে কি আছে ।
নেমে এসো রাস্তায়
ঘুপচিতে জীবন বিষিয়ে যাচ্ছে
মনে মনে বার যে বলো
ইঁদুরের মতো কেবল গর্তে ঢোকা ।
২.মাঝে মাঝে কিছু লিখতে চাই না
তবু ও কেউ লিখিয়ে নিয়ে যায় আদিগন্ত
দূর থেকে ভেসে আসা বাচ্চাদের হৈ হুল্লোড় অনুবাদের চেষ্টা করি
অনেকটা সদ্য বয়সন্ধি পেরুনো বালিকার স্তনের সৌন্দর্যের অধিকারী হওয়া ;
ব্লকহোলের মতো পুরোটা মাথা ভরতি অসস্থির কোন মানেই জানি না
তবুও একটা সমুদ্রে লবনাক্ত জল ঢালি
আর পাতাদের সাথে কথা বলি আজ কেউ কথাবলা গাছেদের পোশাক ছিড়ে সংখ্যা বসিয়ে গেছে
সময় থাকলে আমিও দাড়াতাম কেউ হয়ত আমাকেও নম্বর দিতে পারে লাশকাটা ঘরে !
উফ বিশ্রী অন্ধকার একটা কাকের মতো
আমি প্রেমিকার সাথে মিলত হই পূর্ণ আলোয় ।
আজ কতকাল পরে জানতে ইচ্ছে হচ্ছে তুমি কেমন আছো?
তবু ও কেউ লিখিয়ে নিয়ে যায় আদিগন্ত
দূর থেকে ভেসে আসা বাচ্চাদের হৈ হুল্লোড় অনুবাদের চেষ্টা করি
অনেকটা সদ্য বয়সন্ধি পেরুনো বালিকার স্তনের সৌন্দর্যের অধিকারী হওয়া ;
ব্লকহোলের মতো পুরোটা মাথা ভরতি অসস্থির কোন মানেই জানি না
তবুও একটা সমুদ্রে লবনাক্ত জল ঢালি
আর পাতাদের সাথে কথা বলি আজ কেউ কথাবলা গাছেদের পোশাক ছিড়ে সংখ্যা বসিয়ে গেছে
সময় থাকলে আমিও দাড়াতাম কেউ হয়ত আমাকেও নম্বর দিতে পারে লাশকাটা ঘরে !
উফ বিশ্রী অন্ধকার একটা কাকের মতো
আমি প্রেমিকার সাথে মিলত হই পূর্ণ আলোয় ।
আজ কতকাল পরে জানতে ইচ্ছে হচ্ছে তুমি কেমন আছো?
৩.এক পীচ রাস্তার মোড়ে
দ্যাখা হতে পারে
কিছু কুয়াশারা জমা আছে চিবুকে
রোদ জমা রাখা সে বাগানের ফুল গুলো তুলে রেখে
এক পীচ রাস্তার মোড়ে দ্যাখা হতে পারে
দ্যাখা যদি হয়
কি নামে ডাকতে পারি তোমাকে দীপান্বিতা!
দ্যাখা হতে পারে
কিছু কুয়াশারা জমা আছে চিবুকে
রোদ জমা রাখা সে বাগানের ফুল গুলো তুলে রেখে
এক পীচ রাস্তার মোড়ে দ্যাখা হতে পারে
দ্যাখা যদি হয়
কি নামে ডাকতে পারি তোমাকে দীপান্বিতা!
৪.তোমাদের শহরে পুড়ে গেছে কবে আত্মা
পোড়া আত্মার ঘ্রাণে
মাতাল তুমি জেগেছিলে বনে ।
বন ডেকেছিলো তোমায়
ও তোমার কি নাম ছিলো? কী নামে ডেকেছিলো!
তোমাদের শহরে রুপকথা মেলে থাকে বইয়ে
সাদা পাতায়
কে লিখেছিলো তোমার নাম
কোন দুপুরে সূর্য উঠেছিলো দীঘির অতলে !
পাখি, পাখি ছিলো সেখানে
গেয়েছিলো তোমার প্রাণের কাব্য
তুমি ,তুমি জেনেছিলে বিষাদ;
আর তাই বিষাদ ছড়াতে নামলে রাঙা রাঙা পথে ধূলিতে এ শহরের আগুনে ।
পোড়া আত্মার ঘ্রাণে
মাতাল তুমি জেগেছিলে বনে ।
বন ডেকেছিলো তোমায়
ও তোমার কি নাম ছিলো? কী নামে ডেকেছিলো!
তোমাদের শহরে রুপকথা মেলে থাকে বইয়ে
সাদা পাতায়
কে লিখেছিলো তোমার নাম
কোন দুপুরে সূর্য উঠেছিলো দীঘির অতলে !
পাখি, পাখি ছিলো সেখানে
গেয়েছিলো তোমার প্রাণের কাব্য
তুমি ,তুমি জেনেছিলে বিষাদ;
আর তাই বিষাদ ছড়াতে নামলে রাঙা রাঙা পথে ধূলিতে এ শহরের আগুনে ।
৫.অনেক দিন কিছু লিখছি না ;শ্যাওলা ধরা জলের ঘাটে বসে থাকি পাখির ভাষা বুঝতে
।
[]বিছানা
আমরা যখন পাশাপাশি শুয়েছিলাম,
তোমার চুলগুলো যখন সে শঙ্খ স্তন ঢেকে রেখেছিলো ; তোমাকে কেবল বলেছিলাম, কথা দাও , কথা থাকুক
,কথা দিবে আমরা
কখনো পরস্পর বিচ্ছিন্ন হবো না।
আমরা কি রেখেছিলাম সে কথা!
বিছানা আজ অভিশাপ দেয়, কতদিন বিচ্ছিন্ন
বিছানায় আমার
ও ঘুম দেবতা চোখে আসে না ।
[] প্রেম
আমার একটা নীল রঙের শার্ট ছিলো।
একটা শার্ট আমার খুব প্রিয়ছিলো, ওটা তুমি একদিন পুরোদিন পরে ছিলে,
তুমি হারিয়ে যাওনি বটে ; সে দিন এর সময় নিয়ে নীল শার্টটি হারিয়ে গেছে।
প্রিয়তমা তোমার শরীরে চুমু খাওয়া দিনে
জেনেছিলাম,
প্রেম শুধু মনের না, শরীরের ভাষায়
ও যুক্ত । তোমার ঠোঁটে ঠোঁট রাখতে গিয়ে যে রক্তরা ঝরেছিলো,
তা প্রমাণ দিয়েছিলো নারী
পুরুষ কিছু মিলন লাল রঙের ও হয় ।
প্রিয়তমা, একদিন তুমি ও মরে যাবে,
একদিন আমি ও মরে যাব, আমার সন্তানেরা কি জানবে, কতটা ভালোবাসায় তাদের জন্ম হয়েছিলো !
সে আবেগ কী তাদের ভেতর ও জন্মাবে
?
[] আমি কেন ঈশ্বরে বিশ্বাস করি
না ।
মৃত্যু মৃত্যু একটা গোলকধাঁধা। ঈশ্বর ও যার সমাধান জানে না ।
ঈশ্বর বলতে আসলে কেউ নেই, থাকলে
তিনি আত্মহত্যা করতেন।
অতটা নি:সঙ্গতা কারো সহ্য হয়!
[] বিবাহ বিচ্ছেদ
নামের সাথে নাম মিলিয়ে
লিখতাম,
যেন আমরা অবিচ্ছেদ্য যেন আমাদের একটি নাম। আমরা
ঠোঁটে ঠোঁট আটকে রাখতাম যেন
একসাথে শ্বাস নিতে পারি।
আমাদের দু'জনার একটাই বিছানা ছিলো,
একটি মাত্র বালিশেই
আমরা পাশাপাশি শুতাম
যেন পরস্পরের নি:শ্বাস পরস্পর শুনতে পাই।
হায়! আমি তোমাকে
ভালোবাসি,
এখন একথাটি বললে যেন নিজেকেই শোনানো হয়;
কেননা, আমরা শিখে গেছি
ভাগাভাগি ও নি:সঙ্গতা ।
[] নারী ও
পৃথিবী ।
নারী কবিকে বোঝে
যেমন, পৃথিবী তার সন্তানকে বোঝে, প্রেমিককে বোঝে।
[] আকাশ
সমুদ্রে ।
প্রতিবার মিলিত হবার
সময়ে আমরা
প্রতিজ্ঞা করতাম পরস্পরের প্রতি।
হে প্রিয়তম,
আমরা আমার মিলিত হবো
এবং কেউ কারো প্রতি অকৃতজ্ঞ ও বিশ্বাসঘাত হবো না ।
দিনটি ছিলো নিগ্রো
নারীর মতো উজ্জ্বল কালো
যাকে সূর্য পুড়িয়ে আর কালো বানানোর চেষ্টা করছে না ।
আমি ভাবতে থাকি, কত তম বয়সে তুমি জননী হবে! আর আমি হবো ঈশ্বর ।
Ω জীবন, গরুর রচনা
সাবান ফুরিয়ে যাচ্ছে, স্নান শেষ হচ্ছে না;
দুটো গোলাপের আলাপ ঘুরে যাচ্ছে কামিনীফুলের দিকে,
গ্রীষ্মের ছুটিতে বসে অনায়াসে লেখা হচ্ছে শীতের কবিতা;
শুধু রেইনি ডে-তে শুয়ে বন্ধুর হানিমুনের ছবিগুলো,
ভুলেও দেখছি না, দেখা যাচ্ছে না...
সমুদ্র হয়ে উঠছে অতৎপর তারাদের দেশ;
ঐদিকে যাচ্ছি না, যাওয়া যাচ্ছে না...
শৈলেয়ী সরকার
কমলা
সবাই বলে 'বাহ্'
কমলালেবুটা বেশ
আলতো করে
খোসা ছাড়িয়ে একে একে
চলে গেল লোভীদের তালিকায়
কমলা রঙটি
কমলা রইল না
সূর্যস্নাত বসু
ভ্যালেন্টাইন
গিফট
--------------------
আমি যেখানে
জন্মেছিলাম সেটা ম্যাপল পাতার দেশ ।
যেখানে প্রথম
সিগারেট খাই, সেখানে পেট্রোল পাম্প ছিল ।
যেখানে প্রথম
তোমাকে দেখি তা ছিল লিপবামের কারখানা ।
#
সেই কারখানা হয়ে
দুটো এন এইচ পেরিয়ে পৌঁছে যেতাম আমি
প্রথম লাইনে । হাজারটা দোতরা, হাজারখানেক শুকনো পাতায় মোড়া বাড়ি ।
এখন শুনেছি কেউ
কেউ সেখানে স্ট্রবেরী বেচেন ,
জ্যোৎস্নায় ওড়ে
স্ট্রবেরীর
রাংতা ।
#
আমি যেখানে
জন্মেছিলাম সেটা আস্তো একটা ম্যাপলের ডাল
আর ডাল মানেই যে
শুধু জিরোবার জায়গা তা নয় । তবে দুটো দোয়েল আছে
কোত্থেকে দু
ফোঁটা অমৃত ঠোঁটে এনে গুঁজে দেয় আমার মুখে ।
তাই তো এতদিন
বেঁচে আছি ।
#
এখন জিরোতে
জিরোতে কখন যে ঘুমিয়ে গেছি;
খেয়াল নেই ।
#
এই ঘুমোনো
কিন্তু এখনও চলছে । বছরে দুদিন শুধু জেগে উঠি
তারপর বইমেলা
যাই । রাতে গ্লাসে আশ্চর্য বীয়ার ঢেলে আবার ম্যাপেল গাছে চড়ে বসি ।
তার নীচে দেখি
প্রতিদিন কোনও না কোনও যুবক এসে চিৎকার করে বলেন, ‘পাত্রী চাই ।’
আমি আমার ম্যাপল
পাতা দুজনেই খুশী
কেউ কখনই বলেন
নি, ‘আমার চাকরী চাই ।’
#
যে আমার কাছে
চাকরী পায়, তাকে আমি চিনি না ।
যে চাকরীর কাছে আমাকে
পায় তাকে আমি চিনি
অর্থাৎ
বলাবাহুল্য আমি বিপাশাকে চিনি, ঐন্দ্রিলাকেও ।
ওরা আমাকে
ল্যাপটপ গিফট করে, হাজার তেত্রিশেক টাকাও দেয়
কিন্তু তারপরই
ম্যাপেলের একটা ডাল কেটে গরু বাঁধার গোঁজ বানায় ।
আর রাখাল এলে পর
বিপাশা আমায় আরেকটা ল্যাপটপ উপহার দেন
ঐন্দ্রিলা চৌত্রিশ
হাজার টাকা গুঁজে দেন হৃদয়ে ।
#
হৃদয় যখন সবাই
দেয়, আমি কি তখন কৃতজ্ঞতা স্বরূপ তাঁদের টেবিলে
দু একটি ম্যাপল
পাতা রাখতে পারি না ?
রমিত দে
-----------------------------------------------------
সম্ভবত হাই তুলছিল, ছোট্ট একটা মানুষ
দেখতে পায়নি সামনে গাছ
তার কাছে গ্যাঁজলা তুলছে নতুন বাড়িটা
দেওয়ালের রংটা
কাদা ধুতে ধুতে কুয়োর খোঁজ করছে খেলার মাঠটা
হাঁটুমোড়া পা আর মশারিঘেরা মাথা
সেলাইয়ের একটা শখ শুকোতে দেওয়া শুশ্রূষার সহজপাঠে
চোখের ভেতর ক্যানোপি
চষবে কিভাবে !
কে দেখবে ঈষৎ আলোয় আয়নাদের দল বেঁধে আত্মহত্যা !
আমাদের হাজার রকমের ওড়া
একটা ওড়াকে উষ্ণতা বললো কেউ
তো একটাকে উনুন দিয়ে গেল
বকাবকি কোরোনা, ওড়াকে যেকোনো নামে ডাকো
দাগ ও দামের ভেতর খুঁজে নাও এক কিস্তি দাহ
একটা ঘষা কাচ
সে আজ জল মুছবে না
ঘুম আর স্বপ্নের ভেতর রেগুলেটর ঘুরিয়ে
রোদ কমিয়ে দেবে
হলুদ রঙের বাড়ি দেখিয়ে বলবে
সুস্থতা তেতলাতে থাকে
এত উচ্চতা নিয়ে কি করে কে জানে !
___________________________________
Comments
Post a Comment