মোহ ৬
মোহ (কবিতা)
সমস্ত সংবাদ উপুড় করে যখন চলে যায় অতীত
তুহিন দাস
সমস্ত সংবাদ উপুড় করে যখন চলে যায় অতীত
তখন সঙ্গে কে থাকে? কয়েকটি মাস ও বছর?
নামমাত্র কিছু স্মৃতি আর ভাবনার হলুদ দাগ,
যে যার মতো বেঁচে থাকার স্বতন্ত্র কৌশল রপ্ত করে
বিক্ষিপ্ত চিত্রের মাঝে ঢুকে পড়েছি, ভাবনা সবাইকে
একা করে গেছে, তবুও আজ কেন দু'টুকরো কম্পন হয়?
বিপন্নতার চিঠিপত্র আজকাল কেউ কাউকে লেখে না,
তাহলে কি লেখে? নীরব ভালো আছো?
তীব্র হ্যাঁ ও না এর মাঝে আছি, অন্তঃত এবার উত্তর দিও ---
এসব কি লেখে? নাকি নিজের বিষণ্নতার মাঝে
কয়েকটি ব্লেড ছেড়ে দেয়? আমরা তাহলে
এতোদিন কোথায় ছিলাম? শরীরে ও রাস্তায়?
ঝড়ে ও জলে? ঠুনকো সন্ধ্যাগুলিতে?
আমরা ছিলাম রবিবারের বাড়ি? সেতুর ওপরে
হেঁটে যেতে যেতে তাকাইনি নিচে জলে?
ঝাঁপ দেবার লোভ হয়নি? আমরা কি ছিলাম
ছোট ছোট ছকে ছোট ছোট পা মেলানো জীবনে?
সিনেমা হলগুলিতে? বা, পার্কে ঠাসা লোকের ভেতরে?
আমরা আসলে কোথাও ছিলাম না, যে যার মতো
বেঁচে থাকার স্বতন্ত্র কৌশল রপ্ত করে,
ভাঙনের মাঝে আটকে পড়া চির ধরা শরীর ছিলো শুধু,
সমস্ত সংবাদ উপুড় করে দিয়ে চলে যায় অতীত...
সচল বোতাম
অত্রি ভট্টাচার্য্য
১.
ভোজালীর কৌটায় দু’-একটা চাঁদ ছুড়ে দিয়ে দেখছি, এখনো
হেটমুন্ড গুণগুণ কচ্ছে রামপ্রসাদী, ভান।
তার পায়ের কাছে বাতিল সাপ
পৃথিবী কয়টি জড়িয়েমড়িয়ে নিয়ে কুন্ডলী আছে হতোদ্যম আছে, .
ভাগ্যিস হতোদ্যম আছে
২
উড়ে এসে দাড়ে বসছে বেজম্মা পাথর ফি’ রাতে
এত থমথমে স্তন আগে দেখিনি
সখী, তোমার পাতালপ্রবেশ নিভে আসছে, দ্যাখো
তোমার বাসনকোসনের শব্দ .
নিভে আসছে
৩
গত যামিনীবছর আমি আধুলী হয়ে উঠেছিলাম। ঐ
দাদখানি কবরে কু-কথাপাড়ায় আমার
জন্ম পড়েছিল।
দীর্ঘ সংকেতবছর আমি অধিত
কাঙাল আমি চৌর্য্যপট । এইরকম ত্রাস ছিল –
বাইকের চারটি চাকা যেন পরস্পরকে
নিয়ত স্পর্শ ক’রে থাকে।¬¬¬¬
৪
ওই স্বাদ টের পেলে তো আর ফিরে আসবার
দরকার ছিল না। সৎবুক, স্বয়ংক্রিয় বাঁক
তামাটে দু’-এক কথা ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাক
আশাবরী আঁবের আদলে
সন্তর্পণ এক লবনঘটিত জলে
ভ্রমণ
সরদার ফারুক
ধোঁয়ার ভেতরে পাহাড়ের অবয়ব। মেঘ আরো গাঢ় হলো
পাইনের পাতা কাঁপছে বাতাসে
কোথায় চলেছি , এ কাদের দেশ ,এখানে কি বরফে-মোড়ানো
মন্দিরের দেখা পাওয়া যায় ?
ওপরে স্বর্গের সিঁড়ি , নিচে পাতালের পথ ?
মৃত্যুনদী চুপ করে আছে । পালকের মতো অন্ধকার
ছুঁয়ে দেয় গ্রীবা ,কম্পমান খোলের ছাউনি
ধোঁয়ার ভেতরে পাহাড়ের অবয়ব। মেঘ আরো গাঢ় হলো
পাইনের পাতা কাঁপছে বাতাসে
কোথায় চলেছি , এ কাদের দেশ ,এখানে কি বরফে-মোড়ানো
মন্দিরের দেখা পাওয়া যায় ?
ওপরে স্বর্গের সিঁড়ি , নিচে পাতালের পথ ?
মৃত্যুনদী চুপ করে আছে । পালকের মতো অন্ধকার
ছুঁয়ে দেয় গ্রীবা ,কম্পমান খোলের ছাউনি
গেরুয়া
সিদ্ধার্থ বসু
সাধু হয়েছিলে অর্ঘ্যভোগের আশে
গুমর তোমার উথলিয়ে উঠেছিল--
বৈরাগী আঁচ জাগে নি তোমার শ্বাসে
দৃষ্টি তোমার উধাও হয় নি দিগন্তে
অনুভবে ছিল অভিমান আর আত্ম--
শুধু ছিলে একা দুটি মিলনের সীমান্তে
আমি আজও ঠিক তত বেশরম,হাভাতে
শরীরে ত্যাগের কোনো দূর অবকাশ নেই--
ক্ষুধা,প্রেম,কাম আজও লেগে নখে,থাবাতে
দাহ্য জনতা: উচাটন,অপগণ্ড
ভিতরে যা পুড়ি, টুকে রাখি সাদা পাতাতে
পোকা নড়েচড়ে কীটাণু-কুটিল মাথাতে:
মোহ,ক্লেশ,ক্রোধ,রতি-যাচ্না প্রচন্ড |
রঙ্গীত মিত্র
তোমার গলায় মুঘল সাম্রাজ্য।
গলার থেকে এক লকেট দূরে আমি।
তবু যুদ্ধের শরীর নামিয়ে
দেখি
তোমার চোখের থেকে রামধনুর শুরু ।
কিন্তু এইবার রামধনুর বানানোর অর্ডারটা কাকে
দেওয়া হয়েছে,সেটা তো জানা হলো না।
Comments
Post a Comment