ডiary : তারা খসাঃ মৃগাঙ্কশেখর গঙ্গোপাধ্যায়





DIARY
AUTHOR



মানুষ খুব সুন্দর ভাবে মিথ্যে বলে। আর মিথ্যেগুলোও একদিন সুন্দর হয়ে ওঠে। যেমন জানতে পারে না কখন সে ঘুমিয়ে পড়ে। জানতে পারে না কখন সে মারা যায়। আমরা সেদিন একটা বিশাল জলার সামনে দাঁড়িয়ে ছিলাম। সেদিন সবাই বলে ছিল তারা খসবে রাতে। প্রচুর তারা একসংগে। অনেকে সারা রাত ফিস্ট করবে ঠিক করেছে। আমি আর আমার একটা বন্ধু। জানি না তারা খসা দেখতে এমন কি ভালো লাগে। তবে একটা রোমাঞ্চ। ঐ বয়সে। দাদা রা নাড়ু মামা দের ছাদে ফিস্ট করছে। আমারও সেখানে থাকার কথা। আমরা পালিয়ে এসেছি এই অন্ধকারে। জোনাকি জ্বলছে মাঠ ভর্তি। জলার ঠাণ্ডা হাওয়া আসছে। দূরে টিপটিপ আগুন জ্বলছে। আমাদের এখানে বলে ভূতের আলো। পরে জেনেছিলাম আলেয়া। ড্রাগনের হাতের ঠেলায় মাটিতে চোখ নামালাম। দেখি জলার ধারে একটা লোক বসে আছে। নেড়া মাথা। গায়ে জামাকাপড় নেই। ড্রাগন বলল, পানিমুড়া। আমি- সেটা কি?
-      জলে ডুবে মরে গেলে পানিমুড়া হয়।
আমি একটু আমতা আমতা করে বললাম, ধ্যাত। তুই জানিস না। গলা বুজে গ্যাছে। ভয় পেয়েছি বুঝতে পারছি। কিন্তু সেটা বোঝালে সম্মান থাকবে না। ড্রাগন হাতটা ধরে একটা ঝোপের আড়ালে নিয়ে গেল। বলল, চুপ করে দ্যাখ। - তোর ভয় লাগছে না? ড্রাগন মাথা নাড়ায়। দেখি লোকটা জলার জল দিয়ে যৌনাঙ্গ ধুচ্ছে। পাশের ঝোপটা অল্প অল্প নড়ছে। এক মহিলা উঠে দাঁড়ালেন সেখান থেকে। তার গায়ের ওপরের অংশে কাপড় নেই। কাপড়ের আঁচলটা তুলে বুকে চাপা দিল। ড্রাগনের দিকে তাকালাম। জলার পেত্নি। ফিস ফিস করে বলল ড্রাগন। আর তখনই ঝাঁকে ঝাঁকে তারা খসে পড়তে লাগল আকাশ থেকে।
আমাদের বড় হওয়া কবে থেকে শুরু হয়েছিল জানি না। নীচু গলায় নিষিদ্ধ বই পড়ত অনির্বাণ। টিফিনের সময় আমরা ঘিরে দাঁড়াতাম। সমদর্শী (নাম পরিবর্তন) চেপে ধরতো রণজয়ের (নাম পরিবর্তন) সদ্য পৌরুষ। একবার স্কুলে ধরা পড়ল পর্ণোগ্রাফির সিডি। ধরা পড়ল হুস্কির বোতল। বা বান্ধবির স্তনের ভাঁজ দেখা গেলে লজ্জায় মাথা নামিয়ে নেওয়া। আমরা বড় হয়ে যাচ্ছিলাম। আর এর সাথে সাথেই দেখলাম ড্রাগনকে ড্রাগন বলে ডাকলে ও রেগে যাচ্ছে। একদিন সম্পা এসে বলল ওর বয়ফ্রেণ্ডকে নিয়ে জলার ধারে গেছিল। সেদিন ঝট করে মনে এসেছিল পানিমুড়া আর পেত্নির ঘটনা। কিন্তু ততদিনে তারা ঝরা শেষ হয়ে গেছে। | |

Comments