এলার্ম - ঊষষী কাজলি








ঠিক অন্ধকার নয়। ধোঁয়া ধোঁয়া আর পোড়া গন্ধে মোড়া একটা উপত্যকার কথা যদি ভাবতে পারো ; সেরকমই কিছু। সেরকমই কথাটা জোর দিয়ে বলা গেলনা কারন আমি বা বাকি অন্যরাও পৃথিবীকে সরাসরি কমলালেবু বলতে পারিনা। আপেল রঙা ঠোঁট, রুটির মত চাঁদও দিব্যি মানিয়ে যায়। আমি একে অন্ধকার বলছি আর স্পেসিফিক কিছু না পেয়ে।

তো সেই উপত্যকায় হর্তাকর্তা ইঁদুরেরা। কর্মব্যস্ততার শিখরে তারা। সাহায্যের জন্যে রয়েছে হরেক প্রজাতির কুকুর। মন্ত্রি সান্ত্রি স্ট্যাটাসের। দেখতে পাচ্ছি এদের অসম্ভব ব্যস্ততা। কিন্তু একটা পর্দা দুলছে অর্ধভেদ্য, নজর এড়িয়ে। যেন সমস্তকিছুর নাগাল ওদের অনভিপ্রেত।

অনেকদিন বইয়ের ভিতর রেখে দেয়া ফুল হঠাৎ বেরিয়ে পড়ার মতো শুকনো অথচ প্রত্নমাতাল এক গন্ধ এসে নাক ছুঁলো। তাঁর উৎসে পৌঁছানোর আগেই আশ্চর্য চেয়ে দেখি মাটি থেকে ছাতার মতন জেগে ওঠা মানুষ। ন্যাড়া মাথা, হাত নেই, আঙুলসর্বস্ব, ড্রসেরা নখ। দাঁতগুলো বাইরে বেরিয়ে এসেছে। চোখের দিকের তাকাইনি একবারও। আমার চোখ চলে গেছে অনতিদূরে স্তুপের ভিতর, অশিতিপর একটা বাঁশি,তুলে নিই। সাতটা গর্ত সাত ঋষির কথা ভাবতে ভাবতে ছুঁয়ে দেখি। এক ফুঁয়ে জেগে উঠবেন রাধিকা!

এগিয়ে যাওয়ার প্ররোচনায় পা ফেলি। আমার সামনে খন্ড খন্ড দেহাংশ ঝুলছে, কুরে কুরে খাচ্ছে পোকারা। পুঁজ,রস গড়াচ্ছে ঊরু,স্তন, গ্রীবা থেকে। হতভম্বের মতন চেয়ে আছি। তীব্র একটা খুনে হাসি ছাপিয়ে যাচ্ছে ভীরু কান। ইঁদুর আর সহকারী কুকুরেরা ভ্রুক্ষেপই করছে না আমাকে। অন্যমনস্ক আঙুল চাপে ভেঙে পড়েছে বাঁশি।

মেঘমল্লার। ঘুম ভেঙেছে সুরে। রিসিভ করার আগেই শান্ত, জ্বলে আছে স্ক্রীন। চটি পায়ে এসে দাঁড়িয়েছি জানালায়। বাইরে,আষাঢ়ের প্রথম বৃষ্টি। 
--


Comments

  1. খুব ভাবতে হয়.....একটুখানি খেঁই হারালেই দলছুট হয় যুবক......কী অসীম তার সীমানা......কী

    ReplyDelete

Post a Comment