সাদাত হাসান মান্টোর তিনটে গল্প






ঠান্ডা গোস্ত


ঈশার সিং ঘরে ঢোকা মাত্র কালওয়ান্ত কৌর বিছানা থেকে উঠে তীক্ষ্ণ চোখে ঈশারের দিকে তাকালো ও দরজাটা বন্ধ করে দিল। তখন রাত-দুপুর গড়িয়ে গেছে আর একটা রহস্যময় নিস্তব্ধতা পুরো শহরটাকে যেন খামচে ধরেছে।

কালওয়ান্ত বিছানায় উঠে আসনের মতো বসলো। ঈশার তখনো হাতে একটা ছুরি নিয়ে দাঁড়িয়ে, সম্ভবত কিছু ভাবনা চিন্তার জটে আটকে। কিছু মুহূর্ত চুপচাপ কাটলো। নিস্তব্ধতায় বিরক্ত হয়ে কালওয়ান্ত বিছানার ধারে এসে পা দুলাতে লাগলো। ঈশার তাও কিছু বললো না।

কালওয়ান্ত এক সুগঠিত নারী। চওড়া নিতম্ব আর উঁচু ও টলটলে স্তন। চোখগুলো ধারালো ও ঠোঁটগুলো রসালো। চিবুকের গড়ন বলে দেয় সে এক শক্তিশালী নারী।

পাগড়িটা ঢিল করে ঈশার তখনো এককোণে দাঁড়িয়ে আছে। ছুরি ধরা হাতটা কাঁপছিলো। ঈশারের গঠন দেখলে বোঝা যায় কালওয়ান্তের মতো নারীর জন্য সে এক যথাযথ পুরুষ। কালওয়ান্ত নিস্তব্ধতা ভেঙে বললো, “ঈশার জান”। ঈশার কালওয়ান্তের দিকে তাকালো কিন্তু ধারালো চোখের দৃষ্টি সহ্য করতে না পেরে আবার চোখ ফিরিয়ে নিল।

“ঈশার জান” আবার একটু চেঁচিয়ে উঠতে গিয়ে গলা নামিয়ে কালওয়ান্ত বললো, “তুমি কোথায় ছিলে এতদিন?”

“জানিনা”, শুকনো ঠোঁটের উপর একবার জিভ বুলিয়ে নিলো ঈশার।

কালওয়ান্ত রেগে উঠলো, “এটা কী ধরণের উত্তর?”

ঈশার ছুরিটা মেঝেয় ফেলে বিছানায় শুয়ে পড়লো। মনে হচ্ছে সে দীর্ঘদিন অসুস্থ ছিলো। কালওয়ান্ত দেখল বিছানাটা ঈশারের শরীর দিয়ে ভরাট হয়ে আছে, ওর কষ্ট হলো। ঈশারের কপালে হাত রেখে ভালোবেসে বললো, “তোমার কি হয়েছে, জান?”

উপর থেকে চোখ নামিয়ে কালওয়ান্তের পরিচিত গালে হাত ছুঁয়িয়ে ঈশার শুধু বললো, “কালওয়ান্ত”...

ঈশারের কণ্ঠস্বরে ছিলো এক গভীর যন্ত্রণা। কালওয়ান্ত ঈশারকে জড়িয়ে ধরে তার ঠোঁটে একটা কামড় মেরে বললো, “বলো, জান।”

ঈশার পাগড়িটা খুলে ফেলে কালওয়ান্তের দিকে এমনভাবে তাকালো যেন কোন এক আশ্রয় খুঁজছে। কালওয়ান্তের পাছায় চড় মেরে মাথাটা ঝাঁকিয়ে নিজের মনে বললো, “এই মেয়ে সত্যি পাগল।”

ঈশারের লম্বা চুল খুলে ছড়িয়ে পড়লো মাথা ঝাঁকানোর সাথে সাথে। কালওয়ান্ত ওই চুলে আঙুল চালাতে চালাতে আদুরে গলায় জিজ্ঞেস করলো, “ঈশার জান, বলো না এতদিন কোথায় ছিলে?”

“ঠাকুমার বাড়ি”, বলে ঈশার কালওয়ান্তের স্তনে হাত বুলিয়ে বললো, “তুমিই সত্যিকারের এক নারী।”

হাতের উপর ছোট আঘাত করে সরিয়ে দিয়ে কালওয়ান্ত আবার জিজ্ঞেস করলো, “আমার দিব্যি, বলো না সত্যি করে, তুমি কোথায় গেছিলে? শহরে?”

ঈশার চুল বাঁধতে বাঁধতে বললো, “না।”

কালওয়ান্ত খুব বিরক্ত হলো, “তুমি শহরে গেছিলে, সেখানে অনেক টাকা-পয়সা লুট করেছো আর এখন আমায় বলতে চাইছো না।”

“আমি আমার বাপের ব্যাটা না, যদি আমি মিথ্যে বলি।”

কালওয়ান্ত এক মিনিট চুপ করে থাকার পর চেঁচিয়ে উঠলো, “কিন্তু আমি বুঝতে পারছিনা সেদিন রাতে কী হয়েছিল। সেদিন আমার পাশে শুয়ে ছিলে, তোমার চুরি করে আনা সব গয়না আমায় পরিয়েছিলে। আমার সারা শরীরে চুমু খাচ্ছিলে, তারপর, হঠাৎ কী হলো? তুমি উঠে জামা-কাপড় পরে বেরিয়ে গেলে... ”

ঈশারের চোখমুখ ফ্যাকাশে হয়ে এলো। কালওয়ান্ত সেটা লক্ষ্য করলো।

- দেখো, ঈশার জান, ওয়াহেগুরুর দিব্যি, আমার কিন্তু সন্দেহ হচ্ছে।

- সত্যিই কিছু সেরকম ব্যাপার নেই, দিব্যি করে বলছি।

ঈশারের কণ্ঠে যেন প্রাণ নেই। কালওয়ান্তের সন্দেহ বাড়তে লাগলো। ঠোঁট চেপে প্রতিটা শব্দের উপর জোর দিয়ে বলতে লাগলো, “কী ব্যাপার ঈশার জান? মাত্র আট দিন আগে তুমি যেমন ছিলে আজ মনে হচ্ছে তুমি তা নেই!”

ঈশার আক্রান্তের মতো উঠে বসলো। কালওয়ান্তকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে তার সারা গায়ে হাত বুলাতে লাগলো।

- জান, আমি একইরকম আছি। দেখো আমি তোমায় এমন জড়িয়ে ধরবো যে তোমার হাড় থেকে উত্তাপ আসবে বাইরে।

কালওয়ান্ত ঈশারকে আটকালো না কিন্তু অভিযোগ জারি রাখলো, “বলো না কী হয়েছিলো সেই রাতে?”

- ঠাকুমার জ্বর!

- তুমি বলবেনা তাই তো?

- কিছু বলার নেই জান।

- যদি মিথ্যে বলো, আমায় লাশ তুমি নিজের হাতে পুড়িয়ো।

ঈশার একটা প্রবল চুমু খেলো কালওয়ান্তের ঠোঁটে। ঈশারের গোঁফ কালওয়ান্তের নাকে ঢুকে যাওয়ায় হাঁচি পেলো। তারপর দুজনেই হাসতে লাগলো।

ঈশার কোটটা খুলে রাখলো। কালওয়ান্তের দিকে ভালবেসে তাকিয়ে জিজ্ঞেস করলো, “চলো তাস খেলি।”

চোখ পাকিয়ে কালওয়ান্ত ভেজা ঠোঁটে বললো, “ভাগো তো!”

ঈশার কালওয়ান্তের পাছায় একটা চিমটি কাটলো। কালওয়ান্ত ব্যাথা পেয়ে সরে গেলো।

"এইটা কোরোনা ঈশার। লাগে"

ঈশার কালওয়ান্তের ঠোঁটে চুমু খেয়ে কামড় দিলো। নিজের শার্ট খুলে ছুঁড়ে ফেলে বললো, “চলো তাস বা‌টা হোক তবে..."
কালওয়ান্ত কৌরের ঠোঁট কাঁপতে লাগলো। ছাগলের যেমন চামড়া ছাড়ানো হয়, যেন তেমন করে কালওয়ান্তের কাপড় খুলে দিলো ঈশার। কালওয়ান্তের নগ্ন শরীরের দিকে তাকিয়ে, হাতে একটা চিমটি কেটে বললে, “ওয়াহেগুরুর দিব্যি, তুমি দুর্দান্ত এক নারী!”

হাতের যেখানে চিমটি কাটা হয়েছে সেই লাল দাগের দিকে তাকিয়ে কালওয়ান্ত বললো, “ঈশার জান, তুমি কী নিষ্ঠুর! ”

কালো গোঁফের নিচে এক হাসি খেলে গেলো ঈশারের, “নিষ্ঠুরতা শুরু হোক তবে...”

সে কালওয়ান্তের ঠোঁটে আর কানের লতিতে কামড়ে শুরু করলো তার নিষ্ঠুরতা। স্তনগুলো মুচড়ে, পাছায় চড় মেরে লাল করে, গালে চুমু খেয়ে আর নিপলগুলো চুষে ভিজিয়ে ছাড়লো। কালওয়ান্ত যেন স্টোভের উপর হটপটের মতে টগবগ করে ফুটতে থাকলো। এইসব ফোরপ্লে সত্তেও ঈশারের লিঙ্গোত্থান হলোনা। কালওয়ান্ত তখন যৌন উত্তেজনায় উপচে পড়ছিলো, ঈশারের অপ্রয়োজনীয় কিছু আদরে বিরক্ত হচ্ছিলো।

“ঈশার, ওই যথেষ্ট, এবার তুরুপের তাসটা ফেলো", কালওয়ান্ত ককিয়ে উঠলো।

এটা শুনে যেন ঈশারের সমস্ত তাস ছিটিয়ে পড়লো। সে সমস্ত শক্তি শিথীল করে হাঁপাতে হাঁপাতে কালওয়ান্তের পাশে শুয়ে পড়লো। কপালটা তীব্র ঘেমে উঠেছে ঈশারের। কালওয়ান্ত অনেক চেষ্টা করেও ঈশারের লিঙ্গ জাগিয়ে উঠতে পারলো না। হতাশ হয়ে আর রেগে কালওয়ান্ত বিছানা থেকে নেমে পেরেকে ঝোলানো চাদরটা নিয়ে নিজেকে ঢেকে ফেললো। চোখ-নাক কুঁচকে জিজ্ঞেস করলো,

“কোন ডাইনির সাথে তুমি এতদিন সহবাস করছিলে ঈশার? যে তোমার সর্বস্ব চুষে খেয়েছে!”

ঈশার চুপচাপ পড়ে রইলো বিছানায়।

"বলো ঈশার, কে সেই খানকি মাগি?”

ঈশার ক্লান্ত গলায় বললো, “কেউ না কালওয়ান্ত, কেউ না।”

চওড়া নিতম্বে দৃঢ়ভাবে হাত রেখে কালওয়ান্ত বললো, “ঈশার জান, আমার সত্যিটা জানা দরকার, ওয়াহেগুরুর দিব্যি, আরেক জন নারী কি আছে তোমার জীবনে?”

ঈশার সিং কিছু বলতে যাওয়ার আগে কালওয়ান্ত ওকে থামিয়ে বললো, “দিব্যি দিয়ে কিছু বলার আগে মাথায় রেখো আমি নিহাল সিং-য়ের মেয়ে। যদি মিথ্যে বলো তো আমি কেটে ফেলবো তোমায়। ওয়াহেগুরুর দিব্যি, বলো অন্য নারী কি আছে তোমার জীবনে?”

ঈশার সিং খুব দুঃখসহকারে হ্যাঁ-বাচক ভঙ্গিতে মাথা নাড়লো।

কালওয়ান্ত অতিরিক্ত রেগে গেলো। মেঝে থেকে ছুরিটা হাতে তুলে নিল। কলা ছাড়ানোর মতো করে ছুরির ঢাকনাটা খুলে ফেললো। ঈশারের গলায় বসিয়ে দিলো এক কোপ। ঈশারের রক্ত ছিটকে এলো। কালওয়ান্ত আরো কোপ মারতে থাকলো ও অন্য মেয়েটির নামে শাপ-শাপান্ত করতে থাকলো।

“ছেড়ে দাও, কালওয়ান্ত ছেড়ে দাও...” দুর্বল হয়ে যাওয়া গলায় বলতে থাকলো ঈশার। ঈশারের কথায় তীব্র যন্ত্রণা শুনে কালওয়ান্ত পিছিয়ে এলো। রক্ত ছিটকে ঈশারের গোঁফে পড়ছে। কৃতজ্ঞতা আর প্রতিবাদের এক মিশ্র অনুভূতি নিয়ে ঈশার কালওয়ান্তের দিকে তাকালো।

- জান তুমি বড্ড তাড়াতাড়ি প্রতিক্রিয়াশীল হয়ে উঠলে। শুনলে না কথা।

জ্বলে উঠে মাথা উঁচিয়ে কালওয়ান্ত বললো, “কে সে? তোমার মা?”

রক্ত ছিটে ঈশারের মুখের মধ্যে ঢুকছিলো। সেই স্বাদ পেয়ে ঈশার শিউরে উঠলো।

- আমি... আমি... এই ছুরি দিয়ে ছ-জনকে খুন করেছি।

- কে সেই মাগি?

কালওয়ান্তের মাথায় আর কোনো চিন্তা ছিলো না। ঈশারের চোখ ঝলসে উঠলো,

- দয়া করে ওকে শাপান্ত কোরো না।

- বলো কে সেই মাগি?

- আমি বলবো তোমায়।

ঈশারের গলা ভেঙে যাচ্ছিলো। নিজের গলায় হাত দিলো ঈশার। রক্তগুলো ছুঁয়ে দেখলো। "পুরুষ কী আজব!”

উত্তরের অপক্ষায় কালওয়ান্ত বললো, “আসল কথায় এসো।”

রক্তমাখা গোঁফের নিচে ঈশারের হালকা হাসি ফুটে উঠলো আবার। "বলছি, তুমি আমার গলা কেটে দিয়েছো। আমায় আসতে আসতে বলতে হবে...”

ঠান্ডা ঘাম ঈশারের কপালে বেয়ে গড়িয়ে পড়লো।

- কালওয়ান্ত, আমার জান। কীভাবে শুরু করবো বুঝতে পারছিনা আমার সাথে কী হয়েছে। শহরে তখন দাঙ্গা ছড়িয়ে পড়েছে, সবার মতো আমিও অংশ নিয়েছি তাতে। আমি তোমাকে লুটের সবকিছু দিয়ে দিয়েছিলাম কিন্তু একটা কথা বলা হয়নি।

ঈশার সিং ককিয়ে উঠলো। কালওয়ান্তের কোনো সহানুভূতি নেই, “কী বলা হয়নি?”

রক্তের বুদবুদ নিয়ে ঈশার বলতে লাগলো, “যে বাড়িটায় আমি লুট করি, সেখানে সাতজন মানুষ ছিলো। তুমি যে ছুরিটা দিয়ে আমায় মারলে, সেটা দিয়ে আমি ছ-জনকে খুন করি। ওই বাড়িতে একটা সুন্দরী মেয়ে ছিলো। তাকে আমার সঙ্গে করে নিয়ে যাই।”

কালওয়ান্ত শুনছিলো। ঈশার গোঁফের কাছে জমা রক্ত ফুঁ দিয়ে সরানোর চেষ্টা করলো।

- বলে বোঝাতে পারবো না কালওয়ান্ত, কী সুন্দর সেই মেয়ে। আমি হয়তো তাকেও মেরে ফেলতাম। কিন্তু নিজেকে বললাম, ঈশার সিং রোজ কালওয়ান্ত কৌরকে খেয়ে মজা নাও, এবার অন্য কিছুর স্বাদ নাও।

কালওয়ান্তের মুখ থেকে একটাই শব্দ উচ্চারিত হলো, “ওহ!”

- আমি ওকে কাঁধে তুলে নিয়ে বেরিয়ে যাই। রাস্তায়...

… কী যেন বলছিলাম? ওহ! হ্যাঁ রাস্তায় নদীর ধারে, একটা ছোট ঝোপের কাছে ওকে নামাই। প্রথমে ভাবলাম তাস বিলি করতে শুরু করি। কিন্তু করলাম না...

ঈশারের ঠোট গলা প্রচন্ড শুকনো হয়ে এসছে। কালওয়ান্ত জিজ্ঞেস করলো, “তারপর কী হলো?”

- আমি তুরুপের তাসটা ফেললাম... কিন্তু... কিন্তু...

ঈশারের গলাটা প্রায় ফিশফিশের মতো শোনাচ্ছে। কালওয়ান্ত ঈশারকে ঝাঁকিয়ে দিয়ে জিজ্ঞেস করলো, “তারপর?”

ক্লান্ত, ঘুম ঘুম চোখ খুলে ঈশার কালওয়ান্তের দিকে তাকালো। কালওয়ান্তের শরীর তখন কাঁপছে। ঈশার বললো, “ও মরে গেছিলো, কালওয়ান্ত, ওটা ছিলো একটা লাশ... ঠান্ডা... ঠান্ডা গোস্ত... দয়া করে আমার হাতটা ধরে থাকো... কালওয়ান্ত...”

কালওয়ান্ত তার হাতটা ঈশারের হাতের উপর রাখলো। ঈশারের হাত তখন বরফের থেকেও ঠান্ডা।










২। লোকসান

দুই বন্ধু মিলে দশ-কুড়ি জনের মধ্যে থেকে একটি মেয়েকে বেছে নিল। তারপর বিয়াল্লিশ টাকা দিয়ে কিনে নিয়ে গেল।

রাত কাটানোর পর এক বন্ধু মেয়েটিকে জিজ্ঞেস করলো, “তোমার নাম কী?”

মেয়েটি নাম বলায় লোকটি ইতস্তত চমকে গিয়ে বলে উঠলো, “কিন্তু আমাদের তো বলা হয়েছিলো যে তুমি অন্য ধর্মের...”

মেয়েটি জবাব দিলো, “উনি মিথ্যে কথা বলেছিলেন।”

এই শুনে লোকটি দৌড়ে তার বন্ধুর কাছে গেলো আর বলতে লাগলো, “ওই হারামজাদা আমাদের ঠকিয়েছে... আমাদেরই ধর্মের মেয়ে গছিয়ে দিয়েছে... চলো এখনই ফেরত দিয়ে আসি...”




৩। কেরামত




লুটের মাল বাজেয়াপ্ত করার জন্য পুলিশ রেইড করতে শুরু করেছে। লোকজন ভয় পেয়ে লুট করা সব মাল বাড়ির বাইরে ফেলে দিতে শুরু করে।

কিছু লোক তো এমনও ছিলো যারা সুযোগ বুঝে নিজেদের মালও সরিয়ে ফেলে, যাতে গ্রেফতার হওয়া থেকে বাঁচা যায়।

এসবের মধ্যে একজনের একজন একটু অসুবিধেয় পড়ে। তার কাছে দু-বস্তা চিনি ছিলো, মুদি দোকান থেকে চুরি করা। এক বস্তা চিনি কোনোরকমে, রাতের অন্ধকারে, পাশের কুয়োতে ফেলে আসে। দ্বিতীয় বস্তাটা ফেলতে যাওয়ার সময় সেও কুয়োতে হড়কে পড়ে যায়।

চেঁচামেচি শুনে কিছু লোকজন একত্রিত হয়, তাকে তোলার জন্য দড়ি ফেলা হয়।

শেষমেষ কিছু যুবক কুয়োয় নেমে তাকে উদ্ধার করে।

কিন্তু লোকটা কয়েক ঘন্টা পরেই মারা যায়।

পরের দিন যখন ব্যবহারের জন্য ঐ কুয়ো থেকে জল তোলা হয় সে জল খেতে মিষ্টি লাগে।

দেখা‌ যায়, ঐ রাত্রেই ঐ লোকটির কবরে কারা প্রদীপ জ্বালিয়ে দিয়েছিলো।





---
অনুবাদ : অংশুমান

Comments