আয়ুচাতাল - দেবজিৎ অর্ঘ্য মুখোপাধ্যায়







( যেসব ঘুম আর জেগে থাকার মাঝখানে )


# একজন অন্ধলোক এগিয়ে যাচ্ছেন । সামনে একটা টানেল। একজন অন্ধ রিকশাচালকও একটু আগে প্রবেশ করেছেন। তিনি প্যাঁপ্যোঁ বাজালেন। প্যাঁপ্যোঁর ইকো হলো। একজোড়া অন্ধ প্রেমিক প্রেমিকা সেই রিক্সার সওয়ারী। টানেল পর্যন্ত একটা রেড কার্পেট পাতা। কোথা থেকে শুরু আমি জানতে পারিনি। একটা সদ্যজাত শিশুর কান্না শোনা যায়। কই তার বাবা তো মিষ্টির হাঁড়ি নিয়ে এগিয়ে আসছেন না?


আমি বোবা। কাউকে কিচ্ছু বোঝাতে পারছি না এরকম পরিস্থিতিতে।


# ঘরময় রঙ্গিন টুপির মেঘ। টুপিগুলো একটা অন্যটার সাথে ধাক্কা খেলেই প্রজাপতি হয়ে যাচ্ছে। আবার প্রজাপতি ধাক্কা খেলেই তোর পুরোনো রুমাল। রুমালের ধাক্কায় রঙ বেরঙের কবিতার বই। বই ধাক্কায় কিছু ভ্রুন। ভ্রুনের ধাক্কার পর শেষে পাই একটা শ্যাওলা পরা আয়না।


আয়না আমাকে ধাক্কা মারতে আসে।আমি পালিয়ে বেড়াই।


একসময় আয়না আমাকে ধরে ফেলে। টাটা ন্যানো’র অ্যাডের মতো আমরা শূন্যে উঠে বুক দিয়ে ধাক্কা মারি আর স্যান্ড ক্লকে পরিণত হই।


# তো ওই টানেলের শেষ মাথায় ঘুরতে যাই লাল লাল বিকেলে। একটা প্রচণ্ড শব্দ নিয়ে জলপ্রপাতের মতো নেমে আসে –

প্রজাপতিদের মেঘ। টুপিদের লাশ। অন্ধ মানুষরা। অসংখ্য ইকো নিয়ে প্যাঁপ্যোঁ শব্দও। রেডকার্পেটের রোঁয়া। রঙ্গিন কবিতার বই। একটুকরো ছেঁড়া রুমাল। কিছুটা নোনতা নিঃশ্বাস। অসংখ্য কাঁচের টুকরো।আমার অঙ্গপ্রত্যঙ্গ। শপিং মলের বাতিল ম্যানিকুইনরা।


এইসব কিছু মিশে একটা প্রপাত। ঝাঁপিয়ে পড়ে নদী হয়। শান্ত গৃহিণী নদী। আমি তার লাল আটপৌড়ে আঁচলের পাশে বসে।


আমার ভীষণ স্নান করতে ইচ্ছা হয়।




---

Comments