Dolchhut Printed 4th Edition - Story-Molecule
অণুগল্প
আমন্ত্রিত
দোয়াত ভাঙলে যা রচিত হয় – শীর্ষেন্দু দত্ত
কালির দোয়াতটা উল্টে গেল খাতাটার উপর।
এতক্ষণ ধরে খাতায় যা যা লেখা হয়েছিল সব হারিয়ে গেল কালির স্রোতে।
বেশীরভাগ কালিটাই খাতার মাঝখানের বাঁধাই শুষে নিলেও কিছু কালিধারা আঁকাবাঁকা এগিয়ে
চলল খাতার উপর।
সবকিছু শেষ হলে দেখা গেল সেই কালির ধারা একটি
লেখায় পরিণত হয়েছে।
লেখাটি হল-"আমার মৃত্যুর জন্য কেউ দায়ী নয়।"
মেঘ ও রৌদ্র –
প্রজ্ঞাদীপা হালদার
অতিরিক্ত,উপচে পড়া
বিষয়সমূহ বারবার ছিটকে পড়ে বৈপরীত্যে।যেমন ঘৃণা উপচে পড়ে ভালোবাসায়, ভালোবাসা
একাকীত্বে।
মধ্য দুপুরে বেহালার তার ছুঁয়ে উড়ে যায় একঝাঁক দুর্বোধ্য পাখি। নখে ছিঁড়ে নেয়
হৃদপিন্ড-ধমনীসকল। এসব দুপুরবেলা আমার কিছু করার থাকেনা বললেই চলে। বারান্দায়
বেতের চেয়ারে আমি। মাঝেমাঝেই দমকা হাওয়ায় জুঁইগাছের ঘন-সবুজ পাতায় গড়িয়ে পড়ে জলের
ফোটা।
এই বাতাসে মেঘ ভেসে
আসে।অরণ্য ছুঁয়ে আসা মেঘ। পাহাড়ী-মেয়ের কোমর জড়িয়ে রাখা মেঘ। বৃষ্টি-মাখা মেঘ।
পদ্মদিঘির গন্ধমাখা মেঘ। এইসব রং-বেরঙ্গীন মেঘের ছানা আঁকড়ে ধরতে থাকে আমার
মধ্যমা-তর্জনী।
ঘোর দুপুরেও পাঙাশ রঙের
আলো জ্বলে থাকে ল্যাম্পপোস্টগুলোয়। টিটোদের চিলেকোঠায় উড়ে এসে বসে এক
শালিক-দম্পতি। সোঁদা ঠোঁটে সুলঝে নিতে থাকে পালক। আর দূরে লাল-হলুদে নতুন বৌ শাড়ি
মেলে দেয় ছাদে। আর ঠিক সেই সিকোয়েন্সে আমি চেয়ার ঠেলে ঘরে চলে আসি।
আমার ঘরে কোনো কোনো
সাধারন তৈজস-পত্রের সঙ্গে একটা যাদু-আয়না আছে। মানুষ-প্রমাণ।আমি মেঘের ছায়ায় দিব্যি বুঝতে পারি কোমরে জমে থাকা পলিচরে হারিয়ে যাচ্ছে মধুমতীর গাং।বুকের
কোনা-কোনাচে জমে উঠেছে নখের দাগ।
যদিও
তিনটে পঞ্চাশের লোকালে আমার শহরে যাবার কথা।আমি ভুলেই যাচ্ছিলাম প্রায়।তবু ভাতের
থালার সামনে বসি।মোচার ঘন্ট,ধোঁকার ডালনা সাপটে খাই।উদ্বৃত্ত ঢেলে দিই বাবার পোষা
সাদা বেড়ালটিকে।
আমি
ঠিকই স্টেশনে পৌছাই।মাতৃময়ী পানঘরের বাঁ-দেওয়ালে পিঠ রাখি।একসময় চেপে বসি তিনটে
পঞ্চাশের লোকালে। এতক্ষনে সত্যিই বৃষ্টি নামে।বৃষ্টি ভিজে গন্তব্যে ছুটে যায়
ট্রেন।আমার জৈব-বৃত্তান্ত ঘিরে জন্ম নেয় শব্দপুঞ্জ। তেমন কুলীন বা অলৌকিক না হলেও
আমি তাদের ডেকে নিই খাতার পাতায়।–
“মনখারাপ একটি দীর্ঘ
বর্ষাকাল
আমি লোয়ায়ত দুঃখে-সুখে
ভিজে যাই অযথাই।”
Comments
Post a Comment