হিমেল হাসান বৈরাগী





শিরোনামহীন
(মিথ্যে)
এ কথা ইতিহাসে লিপিবদ্ধ নেই যে,ছাপ্পান্নজন নারীর স্তনে হাত রেখে জিজ্ঞেস করেছিলাম -
"
শেখ মুজিব কী চাইতেন। গণতন্ত্র না সমাজতন্ত্র?"ওরা প্রতিউত্তর করেছিলো-
"
ধ্যাৎ! তুমি মোটেও রোমান্টিক নও।"
(সত্য)
অন্তর্বাসহীন দেবদারু গাছের নিচে রোজ রবিবার
জুম্মা বাড়ির ইমাম সাহেব বাবাকে দেখতে পেলেই বলেন ,
"
মফিজ মিয়া তোমার ছেলেকে তো মসজিদে দেখিনা একদিনো
কিন্তু টানবাজারে প্রতিদিনই দেখি "
বাবা বলেন " আপনার মতো মিথ্যেবাদীর পেছনে সেজদা দেয়ার চেয়ে টানবাবাজার ই ভালো ।
কই আমি তো কোনদিন আমার ছেলেকে দেখিনি "
(সত্য মিথ্যে)
কাগজে খবর বেরুলো "থানচির তিন্দু ও রেমাক্রি ইউনিয়নে খাদ্যাভাব "বিএনপি বলছে এর জন্য "আওয়ামীলীগ সরকার" দায়ী , সরকার বলছে "জামাত শিবির"
কমিউনিস্টরা বলছে , "পুঁজিতন্ত্রের ভয়াল থাবায় আহত হচ্ছে থানচির জনগন "সাবেক ছাত্র ইউনিয়ন নেতা বলছেন "এর জন্য এমেরিকা দায়ী"
এনজিও ,সুশীল সমাজ ত্রাণ সংগ্রহে ব্যাস্ত । মিডিয়া কাভারেজ চলছে দেদারসে ।
ত্রাণ কমিটি ৮০০ পরিবারের তালিকা লিপিবদ্ধ করেছে ।
যাক লুটপাট এবার খারাপ হবে না ।
আমি সমুদ্র গুপ্তের কবিতা পড়ছি -
"
তোমার দুধের বাটিতে আমি বেড়ালের সাদা লোম মিশিয়ে দেবো
চোখে ফুঁক দেবো, ঢুকিয়ে দেবো ভুরু, পায়ের তালুতে গুল লাগিয়ে পিঁপড়া লেলিয়ে দেবো..."
(মিথ্যে সত্য)
মাথা গুল গুল করছে , ভো ভো করছে
ভন ভন করছে চারপাশ
হাতের আঙ্গুল থেকে বেরিয়ে আসছে রাক্ষসগুলো - এরা কারা ? থানচির ক্ষুধার্ত লোকজন ? আমাকে গ্রাস করছে , হাড় মাংশ ছিবলে খাচ্ছে
আবার,আমারই ভেতর ঘুমিয়ে পড়ছে
আর...আ প না রা, হ্যাঁ আপনারা
দ্বিধান্বিত গন্ডমূর্খ মাতাল - পোয়েট্রিও বুঝেন না পোভার্টিও বুঝেন না।


মৌরী ফুল ফোটে
তোমার স্তনের কাছে; ম্লান হয়ে আসে আমার প্রতিভা
শব্দের রন্ধ্র থেকে উঠে আসে নৈ:শব্দের গ্রীবা।
মধুময় সোনালী নাভীর নিচে -যেখানে রেখেছো জল, নীল রক্তপাত। 
গাঢ় জঙ্গলে ঘেরা ক্ষীরের পিরিচে
চুমুক দিলেই শুনি গলা কাটা কোকিলের
গান।
সচ্ছল নদীর ভেতর এঞ্জিনের নৌকা চালাই,করি স্নান
শুদ্ধ হই, সুসজ্জিত হই । স্বরলিপি লিখে
রাখি ঠোঁটে
এইভাবে তোমার ভেতরে প্রিয়
কাঞ্চনজঙ্ঘায়, সহস্র মৌরী ফুল ফোটে।


তুমুল সন্ন্যাসী হতে হতে
তুমুল সন্ন্যাসী হতে হতে 
সংসারহীন স্বতন্ত্র মশারীর ভেতর বাঁধা পড়ে আছি
চালাক-চতুর রমণীরা নি:সঙ্কোচে চিবিয়ে খেয়েছে আমার দূর্বলতা
পরম অনাদরে; শকুনী যেভাবে খায় তিতিরের হাড়
কাকে দিয়ে লিখাবো আমার নিরেট শূন্যতা ভরা করুণ ইতিহাস?
ধূ ধূ অন্ধকারে বোবা হয়ে আসে দুই চোখ
ঘুঘুদের মতো,তীব্র নি:সঙ্গতাবোধের নৈকট্যে এসে 
দুহাতে আলিঙ্গন করি
নৈরাশ্যের সূর্যোদয়
আমি কি এমন-ই থাকবো চিরকাল?তবে কি এইভাবে যতিচিহ্নহীন কেটে যাবে রবীন্দ্রোত্তর ব্যথিত জীবন?অবুঝ শিশুর মতো মাঝে মাঝে মনে হয়
না থাকার মতো করে থেকে যাই কিছুটা সময়।

Comments