২১ শে - কবিতা সংখ্যা - পর্ব ১৪




মোহ(কবিতা)



|বাতাসে মৃত্যু ভেসে বেড়ায় - অঙ্কুর কুণ্ডু

                           

জাল দেওয়া দুধের সরের মতই
থিকথিকে ছিল সেই বাতাস ,
যে স্বপ্নালু চোখের পাতা কাঁপাত ,
চোখ খুললেই দেখতাম -
এক দেবী-মুখ মৃত্যু হয়ে দাঁড়াত ৷
সকালবেলা ধূপ হাতে
আগে শান্ত করতাম দেবীকে ৷




শব্দের ফাঁকে বাতাস পুরে দিত
ঠোঁট ৷ ক্লান্ত বৃষ্টির ম্যাগনেটিক
ধারার মধ্যেই ওর আসা-যাওয়া -
ও যে দেবী ! দেবী আটকে থাকে না ,
ক্যামেরার ফ্ল্যাশের মত ঝলসে ওঠে
. . . তারপর ছবি ৷ মৃত্যুর পরে
জীবনের আর এক নাম স্মৃতি ৷




দেবী আমার কথা শুনতে পায় ৷
সন্তান ডাকলে মা সাড়া দেয় ৷
যদিও দেবী মা হয়নি ৷ যাকে
চিরদিন পাওয়া যায় না -
সে মা নয় , সে দেবী



মৃত্যুর পর জীবনের নাম স্মৃতি ৷
মৃত্যুর আগে আমার কন্যা দেবী ৷
এখন বাতাসে ভেসে বেড়ায় ওর ছবি ৷
|





|সমর্পণ - রাজেশ চট্টোপাধ্যায়
কেউ কারোর নয়,
কেউ-টা বাদ দিলে
আমি কারোর হয়ে যাই ।

ব্যালকনি আর করিডোরের
 যে শূন্যতা
সেটাই তোমার আমার...
মুখে যত কলঙ্ক, কিছু নয়
                  পাপের লেখচিত্র ।

চন্দ্রপাত গুনে দূরত্ব পার
নতুন করে কারোর হব আমি ।|




|কবি তুমি ... - রাহুল রায়চৌধুরী

আজ দুপঙক্তি প্রেম লিখে রেখ কবি
ভালবাসা নেব গড়ে, ভালবাসা দিয়ে
ফিরে দেখা সব অভ্যাস ভুলে গিয়ে
অথ নিঃশেষে জীবন কবিতাময়
কবি তুমি আজ নতুনের কথা বল
বিষে নীল বুক অমৃত নিক খুঁজে
রাজপথ ছেড়ে হাঁটছি যে ঘাসপথে
সেই ঘাসপথ আমার কবিতা হোক
কবি তুমি দাও টুকরো সকাল রোদ
আরও একবার বেঁচে উঠি ভালবেসে
ছন্দ মাধুরী সুরে সুরে, গানে গানে
নেচে নেচে উঠি পাহাড়ি ঝর্ণা হয়ে
কবি তুমি লেখ দুপঙক্তি প্রেমসুখ
রোজকার মরাছুঁড়ে ফেলি ডাস্টবিনে
যত কালো আছে দুহাতে সরিয়ে পথ
পাশাপাশি হাঁটি তোমার স্পর্শ নিয়ে
কবি হবো কবে তোমার আঙুল ছুঁয়ে
দুপঙক্তি প্রেম ভালবাসা হয়ে ওঠা|





|আবার অংক - স্বাতী বিশ্বাস

সমুদ্র সৈকতে বসে 
  ঢেউ গুনছিলাম একা একা...।

লাভার স্রোতের ধারাপাত
অন্তপুরকে জ্বালিয়ে করছিল ছাই
সেই হোমাগ্নি থেকে উদ্ভূত কায়া
প্রবল সুনামি বেগে গ্রাস করল
অহংকার আভিজাত্য আর স্বত্বা
  
পাটিগণিতের  সমীকরণের নিয়ম
কিংবা বীজগণিতের কমন ফ্যাক্টর
অথবা জ্যামিতির সম্পাদ্য উপপাদ্য
সব গুলিয়ে জন্ম নিল এক নতুন গণিত
যেখানে নেই অংক মেলাবার দায়বব্ধতা ।

আবারও সেই থিওরির পোকা নড়ে ওঠে
যদি না মেলাতে পারি তবে কেন পিছুটান
মনুষ্যত্ব তবে কোন তত্বের ওপর দাঁড়িয়ে
কেন বার বার শুধু বিনিময় প্রথার জয়গান
দায়বব্ধতা বিয়োগ করলে হাতে তবে থাকে কি।|





|দ্বিতীয় জোসনায় - নিখিল নওশাদ

আমায় দিয়েছো রুটি , ভগ্নাংশে , ভূগোলের ভুল ভগ্নস্তুপে
এখানে মায়াময় সিঁড়ি , উলঙ্গ ,
তরতর করে উঠে গেছে আকাশের দিকে ,
কোথায় !

আমি ছেড়ে এসেছি ভুলে একটা জোসনার ফতুয়া
প্রতিদিন চাঁদ খেয়ে খেয়ে সুতো কাটা মাকড়সারা
প্রসব-প্রসঙ্গে মরে গেছে বলে --
আমায় দিয়েছো রুটি , ভগ্নাংশে , ভূগোলের ভুল ভগ্নস্তুপে

তবে আজ ওহে প্রাবন্ধিক ,
পৃথিবীর সমস্ত প্রবন্ধের ফুটনোট লিখে নিয়ে যাও-
'অন্তত পৃথিবীতে, চাঁদ কখনো একটি নয়
না হলে আমার মা দ্বিতীয় জোসনার ফতুয়া হাতে
গোধূলীর গ্রামীণ কপাটে দাঁড়িয়ে আছে কেন ?

দূর দেয়ালে কেন ঝুলে আছে
চাঁদখেকো মৃত মাকড়সারা ?

সহাবস্থান

.
যুবকের সামনে খুলে গেছে পথ
কেননা সে জেনে গেছে
গত আড়াই হাজার বছর ধরে
মহাদেশে কোন মানুষ জন্মায় না
মাঝে মাঝে আবিষ্কৃত হয়

হায় রে নিম গাছ ব্যথা ভুলাবার ছলে
একাই শুষে নিলি সমগ্র তেতো !

.
যদি গাঁজা খাওয়া ছেড়ে দেয় জাকির নায়েক
আর সানি লিওন হার্ডকোর
তবে এই বণিকের কী হবে !
তাই , 'একই ফোল্ডারে সেলুলয়েড জমা আছে'
এমন শর্তে শুরু হলো বাজারের বায়োলজী

ব্যাংক বুঝেছে পর্দা পর্নো
কেবল মানুষ বুঝেনি স্ব-সহাবস্থান |

Comments